বাংলায় কথা বলা ‘অপরাধ’? বিজেপিশাসিত উত্তরাখণ্ডে জওয়ান-পরিবারকে পুলিশের মার!
প্রতিদিন | ২০ আগস্ট ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: গোটা পরিবার বাঙালি। এরাজ্যেই তাঁদের শিকড়। বাড়িতে নিজেদের মধ্যে কথাও বলেন বাংলা ভাষায়। অপরাধ সেটুকুই! আর সেই দোষেই প্রতিবেশীর সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটির জেরে বিজেপিশাসিত উত্তরাখণ্ডে পুলিশের বেধড়ক মারধরের শিকার প্রবাসী বাঙালি অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্মী ও তাঁর পরিবার। পুলিশের নৃশংস মারের জেরে বর্তমানে শয্যাশায়ী ডাক্তারি পড়ুয়া অষ্টাদশী কন্যা।
অভিযোগ, চোখের সামনে পুলিশের মারধরের হাত থেকে মা’কে বাঁচাতে গেলে তাঁর গোপনাঙ্গে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে ওই পুলিশকর্মীদের ও অভিযুক্ত প্রতিবেশীর শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিকে চিঠি দিয়েছেন প্রহৃত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কিরণ সিংহরায়। বর্তমানে কর্মসূত্রে কিরণবাবু সপরিবারে থাকেন উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে। দেরাদুনের জি-৩, রেসকোর্স এলাকায় তাঁর বাড়ি। স্ত্রী সন্তোষ সিংহরায় দেরাদুনেরই বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষিকা। পুলিশি অত্যাচারের পর প্রাণের ভয়ে বর্তমানে ফিরে এসেছেন বাংলায় সোদপুরের পৈতৃক বাড়িতে।
গতকাল, মঙ্গলবার সেই বাড়ি থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন কিরণ সিংহরায়। জানালেন, গত ১৩ আগস্ট বিদ্যুতের তার টানা নিয়ে প্রতিবেশী ব্যবসায়ী মনজিৎ সিং ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে বিবাদ বাধে প্রাক্তন অবসরপ্রাপ্ত সীমান্তরক্ষী কর্মীর। কিরণবাবুর অভিযোগ, এই বিবাদের জেরে স্থানীয় নেহরু কলোনি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এসে তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। স্ত্রীকে বাড়ির ভেতর থেকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাকে ছাড়াতে থানায় গেলে মেয়েকেও থানার ভেতরে ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কিরণবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির পিছনে থাকে মনজিৎ সিং। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের সম্পত্তির উপর ওঁর নজর রয়েছে। ও জানে, যেহেতু আমরা বাঙালি, তাই বিবাদ বাধলে পাশে কেউ থাকবে না। মূলত এই কারণেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছে।’’
তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘শুধু মারধর নয়, আমার স্ত্রীকে জোর করে পেরেক খাইয়ে দিয়েছে। থানার মধ্যে আমার ১৮ বছরের ডাক্তারি পড়ুয়া মেয়েকে গোপনাঙ্গে লাথি মেরে মেরে জখম করেছে। আমি বাঙালি, আমার মেয়ে মানে বাংলার মেয়ে। সে এখন শয্যাশায়ী। আমরা চাই থানার সকল পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা-সহ মনজিতের শাস্তি হোক। প্রধানমন্ত্রী-সহ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’