গোসাবার সাতজেলিয়া পঞ্চায়েতের দয়াপুর পি সি সেন হাই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালীপদ সর্দারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ উঠছে কিছু দিন ধরে। সম্প্রতি স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়েও ঝামেলা হয়। এ বার স্কুলে দেরি করে আসায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ বেশ কয়েক জন সহশিক্ষককে জবা ফুল দিয়ে ‘গান্ধীগিরি’ দেখালেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মণ্ডল-সহ গ্রামের কিছু অভিভাবক।
এই ঘটনায় স্কুল পড়ুয়াদের সামনে অস্বস্তিতে পড়েন শিক্ষকেরা। এখানে প্রায় ৪৫০ জন ছাত্রছাত্রী পড়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ ৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে কোনও কর্মী নেই। গ্রুপ-সি পদে এক জন ছিলেন। কয়েক মাস আগে আদালতের নির্দেশে তাঁর চাকরি গিয়েছে।
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, স্কুলে সঠিক ভাবে পড়াশোনা হয় না। শিক্ষক-শিক্ষিকারা ঠিক মতো আসেন না। নবম-দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা সাধারণ প্রশ্নের উত্তরটুকুও দিতে পারে না, এমনই হাল পড়াশোনার!
অভিভাবকদের দাবি, পঠন-পাঠন একেবারে তলানিতে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গা ছাড়া মনোভাব সে জন্য দায়ী। অনিমেষ বলেন, ‘‘সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় এই স্কুল। এখানে শহরের মতো বেসরকারি স্কুল নেই। ফলে এই সরকারি স্কুলই ভরসা এলাকার ছেলেমেয়েদের। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে ভাবে গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে স্কুল চালাচ্ছেন, তা দেখলে লজ্জা হয়। নির্ধারিত সময়ের প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরে প্রধান শিক্ষক ও তাঁর সহকর্মীরা স্কুলে আসছেন। আবার স্কুল ছুটির আগেই অনেকে চলে যাচ্ছেন!’’
ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অবশ্য গোটা ঘটনায় চক্রান্ত দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুল নিয়ে প্রচুর চক্রান্ত চলছে। আজ অনিমেষবাবু নতুন নাটক করলেন। কয়েক দিন আগে পরীক্ষা নিয়ে ঝামেলা করেন। স্কুলে ঢুকে ভাঙচুর করেন, সিসি ক্যামেরা ভেঙে দেন। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। আমাকে অপদস্থ করার জন্য আজ এই সব করলেন।”
যদিও এ দিন স্কুলে দেরি করে আসার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। বলেন, ‘‘এ দিন সকাল থেকেই প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। আমাকে প্রতিদিন সকালে খেয়া পারাপার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। খেয়াপারাপারে দেরি হয়েছিল বৃষ্টির কারণে। ফলে সামান্য দেরি হয়েছিল আজ।’’