দুই মেট্রোপথের সংযোগস্থল হতে চলেছে বিমানবন্দর স্টেশন
আনন্দবাজার | ২০ আগস্ট ২০২৫
যানজট ঠেলে হাওড়া-শিয়ালদহের মতো রেল স্টেশন কিংবা টালিগঞ্জ-কুঁদঘাটের মতো দক্ষিণ শহরতলি থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছনো নিয়ে উদ্বেগ এ বার কমতে চলেছে। নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর জয় হিন্দ স্টেশন যাত্রীদের সরাসরি টার্মিনালের সামনে পৌঁছে দেবে। প্রায় সাড়ে ২২ হাজার বর্গ মিটারের ওই স্টেশন কলকাতা মেট্রোর বিমানবন্দরগামী দু’টি রুটের সংযোগস্থল হয়ে উঠবে। আপাতত নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোয় বিমানবন্দরে পৌঁছনো গেলেও ভবিষ্যতে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোও একই স্টেশনে মিশতে চলেছে। সে কথা মাথায় রেখেই মাটির প্রায় ১১ মিটার নীচে পাঁচটি প্ল্যাটফর্মযুক্ত নতুন স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে এক এবং দু’নম্বর প্ল্যাটফর্ম নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর জন্য বরাদ্দ। ভবিষ্যতে তিন ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে মিলবে নিউ গড়িয়ার মেট্রো। একটি অতিরিক্ত প্ল্যাটফর্ম থাকছে বিশেষ পরিস্থিতির জন্য।
তেতলা ওই স্টেশনের উপরের তলে প্রবেশপথ। তার নীচের তলে টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের আসা-যাওয়ার পথ এবং প্ল্যাটফর্মের প্রবেশপথ। একেবারে নীচের তলে প্ল্যাটফর্ম। বিশাল আকারের বিমানবন্দর স্টেশনে সাতটি প্রবেশপথ, দু’টি সাবওয়ে, ১২টি লিফট এবং ২২টি এসক্যালেটর থাকবে।নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর চাহিদার কথা মাথায় রেখে ওই মেট্রোর তিনটি প্রবেশপথ আপাতত সম্পূর্ণ তৈরি। প্রস্তুত টার্মিনালে পৌঁছনোর সাবওয়ে। এক নম্বর গেট টার্মিনাল এবং লাগোয়া বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছনোর জন্য। দু’নম্বর গেট ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এবং তিন নম্বর গেট মেট্রোর কার্যালয়ে পৌঁছে দেবে। ওই সব পথের সংলগ্ন লিফট, চলমান সিঁড়ি প্রস্তুত।
চার নম্বর গেট বিমানবন্দর থানা এবং পাঁচ নম্বর গেট আড়াই নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার জন্য। আরও দু’টি পথ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। বিমানবন্দরে পৌঁছনোর সাবওয়েতে ৮৫ মিটার লম্বা দু’টি ট্র্যাভেলেটর রয়েছে। যাতে যাত্রীরা মালপত্র নিয়ে বিনা ক্লেশে টার্মিনালের দিকে যেতে পারবেন। ভিতরের সজ্জায় পরিষেবার চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ হয়েছে। যদিও স্টেশনের ভিতরের সাজসজ্জায় স্থানীয় বৈশিষ্ট্য নেই বলেই অভিযোগ। মেট্রো সূত্রের খবর, ধাপে ধাপে ওই স্টেশনকে আরও উন্নত করা হবে।
নতুন মেট্রোর মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্টের পরে নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে ওই মেট্রোপথের গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সেটির সংযুক্তির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়। শিয়ালদহ-এসপ্লানেড মেট্রোর সংযুক্তি যেমন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্ব এবং পশ্চিম ভাগকে জুড়ে দেবে, তেমনই বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোপথের সম্প্রসারণ উত্তর শহরতলির বাসিন্দাদের কাছে মেট্রোকে পৌঁছে দেবে। ভিআইপি রোড, বাগুইআটি, যশোর রোড এলাকার বাসিন্দারাও শহরের কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য ওই মেট্রোর উপরে নির্ভর করতে পারেন।
এ সব কথা মাথায় রেখেই প্রশস্ত স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। যদিও সমাজমাধ্যমে অনেকের অভিযোগ, দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতা মেট্রোর বিমানবন্দর স্টেশন পিছিয়ে রয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য ওই স্টেশন ধাপে ধাপে আরও উন্নত হবে বলে জানাচ্ছেন।