• নির্মীয়মাণ আবাসনে মশানাশক স্প্রে না-করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কলকাতা পুরসভা
    এই সময় | ২০ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়: নির্মীয়মাণ আবাসনের চৌবাচ্চায় সাত দিন অন্তর মশা মারার স্প্রে না–করলে সেই জমির মালিক ও ডেভেলপারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করবে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। বন্ধ করে দেওয়া হবে ওই আবাসনের নির্মাণকাজও। নির্মাণকাজের জন্য যে জল ব্যবহার করা হয়, তা জমিয়ে রাখা হয় ওই চৌবাচ্চায়।

    ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি রুখতে এখন থেকে মাস চারেকের জন্য এই ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে খোদ পুর আধিকারিকদেরই আশঙ্কা, এই উদ্যোগ প্রয়োজনীয় হলেও তার বাস্তবায়নে অনেক বাধা আসতে পারে।

    সম্প্রতি বালিগঞ্জের সানি পার্কে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তার পরে মৃতের বাসস্থানের চারপাশ পরিদর্শনে গিয়ে পুরসভার আধিকারিকরা দেখতে পান, সেখানে পাশাপাশি দুটো নির্মীয়মাণ আবাসন রয়েছে এবং দুটোর কোনওটাতেই মশা নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সূত্রের খবর, পুরসভা ওই দুই নির্মীয়মাণ আবাসনে কাজ বন্ধ করার নোটিস দেয়। এ বার গোটা শহরেই কলকাতা পুরসভা এই নিয়ম কার্যকর করতে চাইছে।

    তবে এই নিয়ে পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের মধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এমন পদক্ষেপ করার পথে প্রধান বাধা হলো, বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রভাবশালী রাজনীতিকদের একাংশের সঙ্গে ডেভেলপার ও প্রোমোটারদের অনেকের ঘনিষ্ঠতা। তা ছাড়া, এত বড় শহরে প্রতিটি নির্মীয়মাণ আবাসনে এই ব্যবস্থা নিতে হলে যত লোকবল দরকার, সেই সংখ্যক কর্মী পুরসভার নেই।

    আবার কলকাতা পুরসভার এক অভিজ্ঞ অফিসার বলছেন, ‘দিন দশেকের জন্য আমাদের হাতে মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কার্যকর করার যাবতীয় ক্ষমতা দেওয়া হোক। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া রোধে কী ভাবে পদক্ষেপ করতে হয়, সেটা তখন বুঝিয়ে দিতে পারব। আফসোসের বিষয়, আমাদের সেই ক্ষমতা দেওয়াও হবে না, সমস্যাও থেকেই যাবে।’

    পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতার যে কোনও নির্মীয়মাণ বাড়িতে মশা মারার স্প্রে–মেশিন রাখতে হবে। ওই মেশিনে মশানাশক তরল ভরে সাত দিন অন্তর খোলামুখ চৌবাচ্চার জলে, নির্মীয়মাণ বাড়ির আনাচে–কানাচে তা ছেটাতে হবে। এই নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মশা নিয়ন্ত্রণ বাহিনীর কর্মীরা সপ্তাহে একদিন করে ওই নির্মাণস্থল পরিদর্শন করবেন।

    কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক আধিকারিক জানা, মশা নিয়ন্ত্রণের ওই নিয়ম লঙ্ঘন করা হলেই সরাসরি কলকাতার পুর আইনের ৪৯৬ (এ) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। পুর আইনের ওই ধারায় নাগরিকদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, এমন যে কোনও বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে পুর কমিশনারকে। আইন অনুযায়ী, কমিশনার সবুজ সঙ্কেত না–দেওয়া পর্যন্ত ওই নির্মাণের কাজ ফের শুরু করা যাবে না। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এক সময়ে কিছু ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ করা হয়েছিল।

  • Link to this news (এই সময়)