• তিন মাসে জখম ৫ হাজার বাসিন্দা, শিলিগুড়িতে বাড়ছে পথকুকুরের দাপট
    এই সময় | ২০ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: রাজধানী দিল্লি-সহ বিভিন্ন লোকালয় পথকুকুর-মুক্ত করার সুপ্রিম নির্দেশ আপাতত রদ করা হয়েছে। ওই নির্দেশের বিরোধিতায় কয়েক দিন ধরে শিলিগুড়িতে একাধিক পশুপ্রেমী সংগঠন রাস্তায় নেমেছে।

    এই বিতর্কের মাঝে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে শিলিগুড়িতে কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন ৫৩১১ জন। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি পুরনিগম ছাড়াও আশপাশের গ্রামীণ এলাকায় অনেকেই এই আক্রান্তের তালিকায় রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে প্রতি মাসে দেড় হাজারের বেশি মানুষ কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন।

    শহরবাসীর অনেকের মতে, যার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ঘটনা ছাড়া বেশিরভাগ মানুষ জখম হয়েছেন পথকুকুরের কামড়ে। অভিযোগ, শহরে পথকুকুরদের নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া থমকে থাকায় বেড়েছে কুকুরের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে ঝড়ের গতিতে বেড়েছে কুকুরের কামড়ে জখমের সংখ্যা। হাসপাতাল সুপার চন্দন ঘোষ ছুটিতে থাকায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।

    পথকুকুরের কামড় থেকে মানুষকে নিস্তার দেওয়ার কথা বছর খানেক আগে ঘোষণা করেছিল শিলিগুড়ি পুরসভা। সেই মতো দিন কয়েক আগে পুরসভার তরফে ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় একটি পশু হাসপাতাল তৈরি করা হয়। যদিও সেই হাসপাতালে এখনও সম্পূর্ণ পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি।

    শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, 'মাত্র দিন কয়েক আগে হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে। এখনও সেখানে স্থায়ী ডাক্তার নিয়োগ হয়নি। কালিম্পং জেলার দায়িত্বে থাকা এক ডাক্তার এখানে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। লাগাতার পাহাড়ে ধস নেমে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় তিনি আসতে পারছেন না।'

    জানা গিয়েছে, আপাতত কালিম্পংয়ের ওই ডাক্তার মাসে একদিন করে শিলিগুড়ির এই নতুন পশু হাসপাতালে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। মেয়র পারিষদ সিক্তা দে বসু রায় বলেন, 'এই হাসপাতাল থেকে পথকুকুরদের নির্বীজকরণ করা হবে। পাশাপাশি সমস্ত ধরনের পশুদের এখানে চিকিৎসা করা হবে। এ জন্য চার্চ রোডে অবস্থিত শিলিগুড়ি পশু হাসপাতালের চিকিৎসক এবং অ্যানিম্যাল রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট (এআরডি)-র পরামর্শ নেওয়া হবে।'

    কবে থেকে শুরু হবে পথকুকুরদের নির্বীজকরণ? তার উত্তর মেলেনি। পশুপ্রেমী মৌসুমি পালের মতে, 'রাস্তায় চলাচলের সময়ে কোনও ভাবে পথপুকুরদের দেখে দৌড়নো উচিত নয়। দ্রুত গতিতে ছোটার চেষ্টা করলে অথবা অসংলগ্ন আচরণ করলে ওরা নিরাপত্তাহীনতায় আক্রমণ করতে পারে। প্রশাসনের উচিত সঠিক সময়ে পথকুকুরদের ভ্যাকসিন দেওয়া।'

    রাস্তায় কুকুর না থাকলে চুরি-ছিনতাই বাড়বে বলে মনে করছেন মৌসুমি। সূর্যসেন কলোনির বাসিন্দা রজত সরকারের বক্তব্য, 'রাস্তার সব কুকুরকে সরিয়ে ফেলতে বলছি না। কিন্তু সমস্ত পথকুকুরদের ভ্যাকসিন দেওয়া এবং তাদের নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া চালু থাকা দরকার।'

    বর্তমানে শিলিগুড়িতে দশ হাজারের বেশি পথকুকুর রয়েছে। রাত হলেই তাদের দাপট বাড়তে থাকে। কয়েক মাস আগে কুকুরের নির্বীজকরণ চালু করে পুরসভা। কিন্তু স্থায়ী চিকিৎসকের অভাবে মাত্র ১২০০-র মতো কুকুরের নির্বীজকরণ করেই থেমে যেতে হয় পর-কর্তৃপক্ষকে।

  • Link to this news (এই সময়)