• 'ওকে শেষ করে দিয়েছি', স্ত্রীকে খুন করে দিদিকে প্রণাম! প্রৌঢ়ের কীর্তিতে আঁতকে উঠলেন আত্মীয়রা, হাড়হিম কাণ্ড এই জেলায় ...
    আজকাল | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের নৃশংস হত্যাকাণ্ড হুগলিতে। এবার স্ত্রীকে খুন করে দিদিকে প্রনাম করলেন প্রৌঢ়। এরপরই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘিরে হুগলির কোন্নগর মাস্টারপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোন্নগর পুরসভার প্রাক্তন কর্মী অশোক চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রী সবিতা চট্টোপাধ্যায়কে(৫৮) খুন করে পুলিশে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর স্ত্রীর দেহ বাড়িতে রেখে দরজায় তালা দিয়ে দিদির কাছে যান তিনি। এরপর দিদি চন্দনা চট্টোপাধ্যায়কে প্রণাম করেন।

    জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। অশোকের দিদি চন্দনা, খুরতুতো দাদা সহৃদ, বৌদি লীনা চট্টোপাধ্যায়রা জানান, গতকালও দু'জনের মধ্যে চরম অশান্তি হয়। নিত্যদিন দু'জনে ঝগড়া করতেন। যা প্রতিবেশীরাও টের পেয়েছিলেন। বর্তমানে কোনও কাজই করতেন না অশোক। বাজারে ধার দেনাও করেছিলেন। তা নিয়েই দম্পতির মধ্যে অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল, নাকি অন্য কারণে, সেটা তাঁদের জানা নেই।

    জানা গেছে, গতকাল রাতেও তুমুল অশান্তি হয় দু'জনের মধ্যে। আজ সকালে অশোক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়, পাশেই থাকা দিদির বাড়িতে যান। ত্রিবেনীতে থাকেন তাঁর ছোড়দি। তাঁকে ফোন করে জানান, তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন। এরপর অশোকের ছোড়দি তাঁদের বড়দাকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানতে চান। এরপরই খবরটি জানতে পারেন তাঁরা। 

    স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ দরজার তালা ভেঙে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পুলিশের অনুমান, মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

    প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে হুগলির জাঙ্গিপাড়া থানার রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাইপুর এলাকায় স্বামীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল স্ত্রী সহ চারজনকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল নিখোঁজ যুবকের স্ত্রী, শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালিকার স্বামীকে। সোমবার ভোররাতে গভীর নলকূপ থেকে নিখোঁজ যুবকের কঙ্কাল সার দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। 

    মৃত যুবকের নাম রবীন রুই দাস (৩৬)। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চন্ডীতলা থানার জঙ্গলপাড়া গ্ৰামের বাসিন্দা রবীন রুই দাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাঙ্গিপাড়ার কানাইপুর গ্ৰামের অপর্ণা রুই দাসের। সাংসারিক অশান্তি ছিল। তাই স্ত্রী অপর্ণা দাস গত কয়েক বছর শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। 

    পরিবারের এক সদস্যের দাবি, রবীনের স্ত্রীর সঙ্গে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাই নিয়ে অশান্তি চলত। তবে কয়েক বছর ধরে শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াত ছিল রবীন রুই দাসের। ৪০ দিন আগে রবীন জঙ্গলপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বলেছিলেন, শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছেন। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। 

    পরিবারের তরফে জাঙ্গিপাড়া থানায় নিখোঁজ ডাইরি করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে রবীনের স্ত্রী এবং তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রবীনকে খুন করা হয়েছে। এবং ওই খুনের সঙ্গে যুক্ত তাঁর স্ত্রী অপর্ণা। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে খুনের পর দেহ লোপাটের তথ্যও। তদন্তে পুলিশ খোঁজ পায় জাঙ্গিপাড়ার কানাইপুর এলাকার কৃষি জমি সংলগ্ন সেচের জন্য বসানো গভীর নলকূপে দেহ লোপাট করা হয়েছে। দেহ লোপাটের ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনও যুক্ত। 

    রবীনের স্ত্রী সহ শ্বশুর জয়দেব রুই দাস, শ্যালক অভিজিৎ রুই দাস ও শ্যালিকার স্বামী প্রদীপ পাত্রকে রবিবার গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে রবিবার রাত থেকে দেহ উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে পুলিশ। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর সোমবার ভোর রাতে নলকূপ থেকে একটি কঙ্কাল সার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

    হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা জেরায় খুন এবং দেহ লোপাটের অভিযোগ স্বীকার করে। সেই অনুযায়ী অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের পাশাপাশি মৃতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ টেস্ট ও আনুষঙ্গিক একাধিক পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)