এক লক্ষেরও বেশি সমস্যার সমাধান করে নজির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা
বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: কোথাও রাস্তার সমস্যা। আবার কোথাও পানীয় জলের। সেইসব সমস্যার সমাধান করে নজির গড়ল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। জানা গিয়েছে, গত এক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাজুড়ে প্রায় ১ লক্ষ ২৯ হাজার অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে জমা পড়ে। তার মধ্যে এক লক্ষের বেশি সমস্যার সমাধান করল জেলা প্রশাসন। কারণ সমস্যা সমাধানের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রথম পাঁচটি জেলার মধ্যে স্থান পেয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় সমস্যা নিয়ে গ্রামের বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ফোন অথবা চিঠি, মেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন। কেশপুর, চন্দ্রকোণা রোড, গড়বেতা, শালবনী ছাড়াও খড়গপুর ও ঘাটাল মহকুমার একাধিক ব্লক এলাকা থেকে ভূরি ভূরি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেগুলির সমাধান প্রক্রিয়া চলছে। তবে এখনও প্রায় ২৮ হাজার সমস্যার সমাধান হয়নি। আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান কর্মসূচির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে। এদিন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, আমাদের প্রধান কাজ মানুষের সমস্যার সমাধান করা। বহু মানুষ জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। এরফলে বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক বলেন, জেলা থেকে বহু মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। আগে কোনও দিন এই সুবিধা পেতেন না সাধারণ মানুষ। তবে জেলা প্রশাসন অভিযোগ পাওয়া মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মাওবাদী আন্দোলনের জেরে জঙ্গলমহলের এই জেলাজুড়েই উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছিল। গুলির শব্দে ঘুম ভাঙত সাধারণ মানুষের। কিলোমিটারের পর কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকত। গ্রামের রাস্তায় মোরামের উপর মোরাম ফেলে দায়সারা করে সংস্কার করে দেওয়া হতো। সামান্য পানীয় জলও মিলত না। গ্রামবাসীদের কথায়, কেউ কোনও প্রকল্পের সুবিধা পেতেন না। রেশন নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ত। পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠত। তবে সরকার বদলের পর ছবিটা বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে কেশপুর, শালবনী, গড়বেতা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামেও পিচের রাস্তা লক্ষ্য করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু এরপরেও বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি নালা, আলো, নদী ভাঙন সহ একাধিক বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। সেই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে জমা পড়ে।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সিএমও অফিসে ১ লক্ষ ২৯ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি রাস্তার সমস্যা। এছাড়া নদী ভাঙন নিয়েও বিপুল সংখ্যক অভিযোগ জমা পড়েছে। গুরুত্ব দিয়ে আগে রাস্তার সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে। সবং ব্লক থেকে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল। অধিকাংশরই সমাধান হয়েছে। এদিন কেশপুরের বাসিন্দা সুনীল জানা বলেন, গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়েছে।