• ‘আমাদের পাড়া’য় সভাপতি নিয়ে নন্দকুমারে ভোটাভুটি, বিশৃঙ্খলা
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: নন্দকুমারে আবারও ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে সভাপতি নিয়ে হল ভোটাভুটি। বুধবার নন্দকুমার ব্লকের বড়গোদা ৮৭নম্বর বুথের সভায় কে সভাপতি হবেন, তা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির পক্ষ থেকে পৃথক নাম প্রস্তাব করা হয়। সভায় আসা মানুষজন এনিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হলে ভোটাভুটি আবশ্যিক হয়ে ওঠে। ব্লক প্রশাসন ভোটাভুটি এড়াতে দু’দলের দু’জনকেই সভাপতি হিসেবে কাজ পরিচালনার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু, বিজেপির পত্রপাঠ সেই দাবি খারিজ করে দেয়। দফায় দফায় উত্তেজনা বাড়ে। খবর পেয়ে নন্দকুমারের বিডিও দীনেশ দে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। গণ্ডগোলের জেরে অনেকেই সভা শুরুর আগে বাড়ি ফিরে যান। তারপর ফের ভোটাভুটি হয়। বিজেপি প্রস্তাবিত অবনীমোহন দাসকে জয়ী ঘোষণা হয়। তাঁর সভাপতিত্বে এদিনের আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি হয়।

    এরআগে গত ১৮আগস্ট নন্দকুমার ব্লকে ভবানীচক ১৯৬নম্বর বুথে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে সভাপতি বাছাই নিয়ে ভোটাভুটি হয়। সেখানে অবশ্য তৃণমূলের প্রস্তাবিত ব্যক্তিই জয়ী হয়েছিলেন। বুধবার একইভাবে বড়গোদা ৮৭নম্বর বুথে তৃণমূল অজিত খাঁড়া এবং বিজেপি অবনীমোহন দাসের নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করে। সভায় আসা মানুষজন এনিয়ে দ্বিধা বিভক্ত হন। এরপরই ভোটাভুটি শুরু হয়। প্রাইমারি স্কুলের ভিতর প্রচণ্ড ভিড় ছিল। সেখানে হাত তুলে ভোটাভুটিতে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে ঝামেলা বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায় পুলিস। এরপর স্কুলের ভিতর থেকে সকলকে বাইরে বের করে মিড-ডে মিলের ছাউনির নীচে আনা হয়। সেখানে আরও এক দফায় ভোটাভুটি বানচাল হয়ে যায়। এরপর বিডিও যান। তাঁর উপস্থিতিতে তৃতীয় দফায় ভোট হয়। ততক্ষণে অনেকেই বাড়ি রওনা দিয়েছেন। তৃতীয় দফায় বিজেপি জয়ী হয়।আমাদের পাড়া আমাদের সমাধানে সভাপতি বাছাই নিয়ে ভোটাভুটির ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে ব্লক প্রশাসন। এদিন সভার শুরুতে জয়েন্ট বিডিও বড়গোদা বুথে দাঁড়িয়ে বলেন, এই কর্মসূচিতে দু’জন সভাপতি হতে আইনি বাধা নেই। তবে, সভাপতিরা কোনও কাজের প্রস্তাব জমা করতে পারবেন না। ব্লক প্রশাসনের এই ঘোষণায় আপত্তি তোলেন বিজেপির নন্দকুমার-১ মণ্ডল সম্পাদক প্রদীপ দাস। তিনি বলেন, ভোটাভুটির মাধ্যমেই সভাপতি নির্বাচন হবে। যে প্রার্থী জয়ী হবেন তিনিই সভাপতি হবেন। 

    সরকারি কর্মসূচিতে সভাপতি হওয়ার জন্য ভোটাভুটির ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়ছেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকা সাধারণ মানুষজন। কারণ ভোটাভুটি প্রকাশ্যে হচ্ছে। তাতে কারা কোন দলের সমর্থক সেটা প্রকাশ্যে চলে আসছে। এরফলে রাজনীতি থেকে দূরে থাকা ওই মানুষজন নানা সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

    বিজেপি নেতা প্রদীপ দাস বলেন, এদিনের সভায় আমাদের লোকজন বেশি ছিল। সুতরাং সেখানে সভাপতি হিসেবে আমাদের মতামত প্রাধান্য পাওয়া উচিত। তৃণমূল চ্যালেঞ্জ করে পরাস্ত হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বড়গোদাগোদার অঞ্চল সাধারণ সম্পাদক পঞ্চানন মণ্ডল বলেন, সভায় আমাদের অনেক লোকজন এসেছিলেন। কিন্তু, দফায় দফায় ঝামেলা হয়। বিজেপির লোকজন মস্তানি করতে শুরু করে। তাতে মহিলারা সভা শুরুর আগেই বাড়ি ফিরে যান। সভাপতি নির্বাচনের সময় ওদের লোকজন বেশি ছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)