• ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের আলো? দিঘার আকাশে অদ্ভুত দর্শন আলোক রশ্মি, হা হয়ে তাকিয়ে দেখলেন পর্যটকরা ...
    আজকাল | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার সন্ধ্যার আকাশে হঠাৎই অদ্ভুত এক আলোক রশ্মি দেখা গেল দিঘার সমুদ্র উপকূলে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ দিঘার সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠেন। দেখা যায়, আকাশে একদিকে উজ্জ্বল আলোক রশ্মি ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে ধোঁয়ার মতো ছায়া তৈরি হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই দৃশ্য মিলিয়ে গেলেও, ততক্ষণে আতঙ্ক ও কৌতূহল ছড়িয়ে পড়েছে পর্যটন শহর জুড়ে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হঠাৎ এই দৃশ্য দেখে প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো কোনও প্রাকৃতিক ঘটনা বা উল্কাপাত হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ভিনগ্রহী মহাকাশযানের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। তবে শোনা যাচ্ছে এটি কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের আলো। কেউ কেউ বলছেন, ওই সময়  ওড়িশার চাঁদিপুর উপকূল থেকে ভারতীয় সেনার মিসাইল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হচ্ছিল।

    সেই মিসাইলটির নাম ‘অগ্নি–৫’। এটি একটি দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল, যার পাল্লা প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-র অধীনে তৈরি এই মিসাইল নিউক্লিয়ার অস্ত্র বহনে সক্ষম। নিরাপত্তার স্বার্থে পরীক্ষার দিনক্ষণ আগে থেকে প্রকাশ করা হয় না। সেই উৎক্ষেপণ থেকেই উৎপন্ন অগ্নিশিখা ও ধোঁয়ার রেখাই দিঘার আকাশে অদ্ভুত আলোক রশ্মি হিসেবে দৃশ্যমান হয়। যদিও এই কথার সত্যতা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। ফলে নিশ্চয় করে বলা সম্ভব নয় এই আলো অগ্নি-৫ উৎক্ষেপণের আলো না অন্য কিছু। 

    কিন্তু আলো যার থেকেই সৃষ্টি হোক না কেন এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে পর্যটকদের ভিড় জমে যায় সৈকতে। অনেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ও ছবি ক্যামেরা বন্দি করেন।

    দিঘায় এমনিতেই মোটামুটি সারাবছর ভিড় থাকে। এর পাশাপাশি জগন্নাথদেবের মন্দির সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর ভিড় আরও বেড়ে গিয়েছে। হোটেল ও রিসর্টে থাকার জন্য আগে থেকেই বুকিং সেরে ফেলতে হয়। আবার অনেকসময় পৌঁছেও বুকিং সেরে নেওয়া যায়। গত ১৫ আগস্টকে ধরে অনেক অফিসেই পরপর তিনদিন ছুটি ছিল। যার জন্য দিঘায় ভিড় হয়েছিল ব্যাপক। সড়কপথে বা ট্রেনে বহু পর্যটক পৌঁছে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই সৈকত নগরীতে। সেইসময় দিঘার অবস্থা জানাতে গিয়ে দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে জগন্নাথধাম উন্মুক্ত হওয়ার পর দিঘায় ভিড় অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। 

    তিনি জানিয়েছিলেন, টানা ছুটিতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকবে না দিঘায়। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ হোটেলের বুকিং সম্পূর্ণ। বাকি হোটেলেও দ্রুত বুকিং হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভ পদ্ধতিতে এই বুকিং হয় বলে তিনি জানান। সেইসঙ্গে ভিড়ের কথা ভেবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ভিড়ের জন্য সমুদ্র সৈকত, বাজার ও জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর‌ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মওকা বুঝে যাতে কোনো হোটেলের তরফে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়া হয় সেই বিষয়টির উপরেও নজর রাখা হবে। অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয় প্রশাসনের তরফে। এর পাশাপাশি এই বিষয়ে এগিয়ে এসেছে হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনও। তারাও জানায় এই সময়ে তাদের পক্ষ থেকেও খোলা হয় কন্ট্রোল রুম। যেখানে ২৪ ঘন্টা মজুত থাকেন তাদের সদস্যরা। অভিযোগ পেলেই তাঁরা সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। 

    রাজ্যে এখন ভরা বর্ষার মরসুম। পর্যটকদের জন্য দিঘায় সব হোটেলই তৈরি ইলিশ, চিংড়ি ও পমফ্রেট মাছ নিয়ে। বিশেষ করে ইলিশের হরেকরকম পদ নিয়ে দিঘা প্রস্তুত তার পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাতে। সঙ্গে কাঁকড়া তো আছেই।
  • Link to this news (আজকাল)