• জমা জল সরেনি, নৌকো তৈরির হিড়িক
    আনন্দবাজার | ২১ আগস্ট ২০২৫
  • লাগাতার বৃষ্টিতে বনগাঁ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন মাসখানেক ধরে। বৃষ্টির প্রকোপ কমলেও এখনও জল সরেনি। বিশেষ করে গাইঘাটা ব্লকের এবং বনগাঁ শহরের একাংশে এই পরিস্থিতি। জলবন্দি মানুষজন মনে করছেন, জল সরতে পুজোর মরসুম পেরিয়ে যাবে। কারণ, ইছামতী ও যমুনা নদীর জল না কমলে জমা জল সরার উপায় নেই।

    এই অবস্থায় যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমরসমান জল। অনেকে নৌকো কিনছেন। গাইঘাটার বেড়িগোপালপুর এবং বনগাঁ শহরের ঢাকাপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অনেকেই নৌকোয় যাতায়াত করছেন। এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘বাড়িতে যাওয়ার পথে বুকসমান জল। তাই নৌকোই ভরসা।’’ বনগাঁ পল্লিশ্রী এলাকায় দেখা গেল, একটি দোকানে শ্রমিকেরা ব্যস্ত নতুন নৌকো তৈরিতে। এক জন জানালেন, চারটি নতুন নৌকো তৈরি করছেন। আরও নৌকো তৈরির বরাত আসছে। তিনি জানান, একটি নৌকো তৈরিতে প্রায় ন’হাজার টাকা খরচ। চার জন শ্রমিক মিলে এক দিনেই একটি নৌকো তৈরি করা সম্ভব।

    জলবন্দি এলাকার অনেকে জানালেন, পুজোয় নতুন জামা-কাপড় কেনা হোক না হোক, নৌকো তাঁদের চাই। না হলে যাতায়াতই করা যাচ্ছে না। এ দিকে, জল পচতে শুরু করেছে। দুর্গন্ধে অস্থির অবস্থা। চর্মরোগ যে কোনও সময়ে ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা।

    নতুন নৌকো তৈরি করাচ্ছিলেন নিতাই বিশ্বাস। বললেন, ‘‘ইছামতী যত দিন পূর্ণাঙ্গ ভাবে সংস্কার করা না হচ্ছে, তত দিন পুজোর আগে আমাদের জলবন্দি হতেই হবে। সে কারণেই নৌকো কিনে রাখছি।’’ নদী সংস্কার আদৌ হবে বলেও অবশ্য মনে করেন না তিনি! বনগাঁ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ১৯, ২১, ২২, ১৪, ১৭, ৩ এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে এখনও জল দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় তিনশো মানুষ ত্রাণশিবিরে। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘ইছামতী সংলগ্ন এলাকা থেকে জল বের করা যায়নি। তবে অন্যান্য নিচু এলাকার জল পাম্প চালিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। নদীর জল না কমলে নদী সংলগ্ন এলাকার জল বের করা যাচ্ছে না।’’ পুরসভার পক্ষ থেকে বুধবার ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষজনের হাতে খাবার-দাবার তুলে দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)