কল্যাণী এমসে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য এক বিজেপি নেতার দ্বারস্থ হয়েছিলেন ছেলে। পরে রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক বিজেপির অসীম বিশ্বাসের ‘কোটা’য় কেন্দ্রীয় সরকারের ওই হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য নাম লেখানো হয়। কিন্তু সেই মতো চিকিৎসা করাতে গিয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীদের মহিলা ও তাঁর ছেলেকে হাতে হেনস্থা হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবারের এই ঘটনা সামনে আসতেই সরব হয়েছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ।
শান্তিপুর থানার দিগনগর স্টেশনপাড়ার বাসিন্দা আলপনা রায় বেশ কিছুদিন ধরেই স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর ছেলে সুজিত রায় এক বিজেপি নেতার মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বিধায়ক অসীম বিশ্বাসের সঙ্গে। তার পরেই কল্যাণী এমসের বহির্বিবিভাগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ মেলে।
সুজিত বলেন, “কল্যাণী এমস যাওয়ার জন্য রাত আড়াইটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোই। খুব ভোরে কুপন নিতে হয়। কিন্তু নাম লেখানো সত্ত্বেও এক নিরাপত্তার রক্ষী আমাদের কুপন দিতে অস্বীকার করেন। আমায় বলে দেওয়া হয় যে মায়ের নাম রোগীর তালিকায় নেই।”
সুজিতের কথায়, “আমি আগেও শুনেছি যে তালিকায় নাম অদলবদল করা হয়। তাই আমি জোর করে ওই তালিকা দেখতে চাই। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, তালিকায় নাম রয়েছে। তার পর দেওয়া হয় কুপন।” তাঁর দাবি, “এ ভাবে রোগীদের ফিরিয়ে দিয়ে ওই কুপন অন্যত্র বিক্রির চক্রান্ত চলছে।” বুধবার দুপুরে ইমেল মারফত এমস কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি এই নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছেন।
এ দিন বিধায়ক অসীম বিশ্বাস বলেন, “আমার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত অনেক রোগী ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন। তবে এই ধরনের অভিযোগ আগে কখনও শুনিনি।” তবে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, “বিধায়ক বা সাংসদের সুপারিশ নিয়ে চিকিৎসা করাতে করাতে গিয়ে ঘাড় ধাক্কা খেতে হবে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।” তাঁর দাবি, “টাকা নিয়ে কুপন বিক্রি চলছে, এমন অভিযোগ মাঝেমধ্যেই আমাদের কাছে আসছে। আমরা কখনও অনিয়ম বা অনৈতিক কাজ সমর্থন করি না। যারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন।”
এ প্রসঙ্গে কল্যাণী এমসের জনসংযোগ আধিকারিক সুকান্ত সরকার বলেন, “রোগী বা তাঁদের আত্মীয়দের কোনও অভিযোগ থাকলে আমাদের গ্রিভান্স সেলে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারেন। কুপন বিক্রির যদি অভিযোগ উঠে থাকে, তা হলে তা গুরুতর। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”