এই সময়, শিলিগুড়ি: ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ২৯ মাইল পেরোতে গিয়ে হয়রানি কিছুতেই কাটছে না। টানা ছ’দিন রাস্তা বন্ধ করে মেরামতির পরে ৪৮ ঘণ্টাও কাটল না, বুধবার ফের ধসে জেরবার হলেন নিত্যযাত্রীরা। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টায় নতুন করে ধস নামে ২৯ মাইলে।
সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি চলে কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ে। দুপুরে এক পশলা বৃষ্টি হয় শিলিগুড়িতেও। বৃষ্টির জেরেই নতুন করে ২৯ মাইলে ধস নামে বলে জাতীয় সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের অনুমান। ধসের জেরে কয়েক ঘণ্টা রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
একমুখী যান চলাচল ব্যবস্থা চালু করা হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট অব্যাহতই ছিল। নিগমের পক্ষ থেকে আগেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ধসপ্রবণ এলাকাগুলির মেরামতির জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করা হয়।
এ দিন দিল্লিতে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের হাল খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়করির সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা জানান বলে দাবি করেছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ। বিস্তের বক্তব্য, তিস্তা নদীখাত বদলে ফেলেছে। আগে নদীখাত জাতীয় সড়কের উল্টোদিকের পাহাড়ে গা ঘেঁষে বইত।
২০২৩ সালে সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে এখন নদী খাত জাতীয় সড়কের পাশে চলে এসেছে। জলের তীব্র স্রোতে পাহাড়ের তলার মাটি ধসে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিপদের মুখে রয়েছে জাতীয় সড়ক।
পাহাড়ের নীচে ও ঢালে মেরামতি, নদীখাত থেকে পলি তোলা–সহ একগুচ্ছ কাজে হাত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। সাংসদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলেছি, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতিতে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া দরকার। একই সঙ্গে সড়ক মেরামতির কাজে জড়িত সমস্ত কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি সংস্থাগুলিকে নিয়ে সমন্বয় কমিটি গঠন করা দরকার।’
বার বার জাতীয় সড়ক ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন পর্যটন সংস্থাগুলি। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘পুজো আসছে। তার আগে রাস্তাগুলির স্থায়ী মেরামতি দরকার।’ এ দিন পর্যটন সংস্থার পক্ষ থেকে সিকিমের পর্যটনমন্ত্রী ছিরিং থেনডুপ ভুটিয়াকে চিঠি দিয়ে দ্রুত উত্তর সিকিমে পর্যটকদের যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।