একসঙ্গে প্রাতরাশ, স্ত্রী কাজে যেতেই ফাঁকা ফ্ল্যাটে ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটালেন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী, মাথায় হাত পরিবারের ...
আজকাল | ২১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: চন্দননগরে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু! বহুতল আবাসন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে সন্দেহ পুলিশের। দেহ উদ্ধার করে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম, সৌমেন দে (৩৯)। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চুঁচুড়া খাদিনা মোড় রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চের কর্মী ছিলেন সৌমেন দে।থাকতেন চন্দননগর রথের সড়কের একটি অভিজাত বহুতলে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি রয়েছে চন্দননগর বৈদ্যপোতায়। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার বছর দুয়েক পর, দ্বিতীয় বিবাহ করেন সৌমেন। তারপর বহুতলে ফ্ল্যাট কেনেন।
সেখানেই স্বামী ও স্ত্রী দু'জনে থাকতেন। আজ সকালে তাঁর স্ত্রী বাবাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে বেরিয়ে যান কলকাতায়। যাওয়ার আগে বাড়িতেই খাবার খেয়ে যান দু'জনে এ সঙ্গে। স্ত্রী বেরিয়ে যেতেই আটতলা ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দেন সৌমেন। ধপ করে পড়ার শব্দ পেয়েই ছুটে যান স্থানীয়রা।
চন্দননগর পুরো নিগমের সিপিআইএম কাউন্সিলর অশোক গাঙ্গুলি ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, 'আবাসন থেকে একজন ঝাঁপ দিয়েছেন শুনে আমি চলে আসি। উনি একজন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন। ফ্ল্যাটে তখন একাই ছিলেন। ফ্ল্যাটের উত্তর দিকের লবি থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে জানা যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।'
ব্যাঙ্ক কর্মীর মাসতুতো দাদা শোভন শীল বলেন, 'মাসি ফোন করে জানায় ভাইয়ের দুর্ঘটনা হয়েছে। কী করে হল, কেন হল জানি না। রথের সড়কের আবাসনে ভাই আর তার স্ত্রী থাকত। আজকে অফিসে যাওয়ার আগে এটা হয়েছে। আমি শুনেছি দুর্ঘটনা হয়েছে। হাসপাতালে এসে শুনি ফ্ল্যাট থেকে পড়ে গেছে।' পারিবারিক কোনও সমস্যা, মানসিক অবসাদ ছিল কি না তা বলতে পারেননি শোভন।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই যুগলের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় হুগলির বৈদ্যবাটিতে। গভীর রাতে দু'জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর কারণ ঘিরে এখনও ধোঁয়াশায় তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন, মনীশ ভাদুড়ী(৩৫) ও অপর্ণা মাঝি(৩২)। বুধবার রাত তিনটে নাগাদ তাঁদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। বৈদ্যবাটি রাজার বাগানে মনীশের বাড়ি আছে। গত ছয় বছর ধরে সীতারাম বাগানে ভাড়া ছিলেন দু'জনে।
তাঁদের প্রতিবেশী শুভেন্দু মাঝি জানান, রাত তিনটে নাগাদ 'বাবাগো, মাগো' বলে চিৎকার শুনতে পান তাঁরা।তারপর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মধ্যে একজন এবং ঘরের বাইরে পড়ে রয়েছেন আরেকজন। রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা ছটফট করেন। রাজার বাগানে মনীশের বাড়ির লোককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে।
জানা গেছে, মনীশ একটি ঢালাই কারখানায় কাজ করতেন। অপর্ণা পরিচারিকার কাজ করতেন বলে জানা গেছে। তাঁরা এক সঙ্গে থাকতেন। দু'জনে সকালে কাজে বেরিয়ে যেতেন। রাতে বাড়ি ফিরতেন। মনীশ নেশা করতেন, তা নিয়ে দু'জনের মধ্যে মাঝে মাঝেই অশান্তি হত বলে জানান প্রতিবেশীরা। তাঁদের অনুমান, নিজেরাই হাতাহাতি করার সময়, ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করেন একে অপরকে।
ঘটনার তদন্তে আসেন চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্নব বিশ্বাস, আইসি শ্রীরামপুর সুখময় চক্রবর্তী। বাইরে থেকে কেউ খুন করেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।