পরেশ পাল এবং দুই তৃণমূল কাউন্সিলরকে আগাম জামিন দিল হাইকোর্ট
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ আগস্ট ২০২৫
কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার হত্যার ঘটনার জেরে দায়ের হওয়া খুনের চেষ্টার মামলায় বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালকে জামিন দিল আদালত। তিনি ছাড়াও দুই কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষকে শর্তসাপেক্ষে আগাম জামিন দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এক লক্ষ টাকার বন্ডে তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন। সিবিআই চার্জশিট চার বছরে দিলেও অভিযুক্তেরা সবাই সহযোগিতা করেছেন। সেই মর্মে এদিন জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে রাজনৈতিক অশান্তির অভিযোগ ওঠে। কাঁকুড়গাছিতে সেই হিংসার বলি হন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার, এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। আদালতের নির্দেশে সেই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তাদের অতিরিক্ত চার্জশিটে উঠে আসে তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষের নাম।
এর পাশাপাশি অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার নারকেলডাঙা থানায় একটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে অভিযোগ, গাছ কাটার অজুহাতে অভিযুক্তরা গুন্ডাবাহিনী পাঠিয়ে শীতলাতলা লেনে তাঁদের বাড়ির সামনে হামলা চালায়। কাটা গাছের ডাল ফেলা হয় গ্যারাজের সামনে থাকা গাড়ির উপর এবং এলাকার বিদ্যুতের তারের উপর। বিশ্বজিতের দাবি, তাঁকে মারধর করা হয় ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। পরেশ পাল অবশ্য দাবি করেন, তিনি বিশ্বজিৎকে চেনেন না।
এই মামলাতেই হাইকোর্ট অভিযুক্তদের আগাম জামিন দিলেও তাঁদের ওপর তিনটি শর্ত আরোপ করেছে। আদালত জানিয়েছে, তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তরা শীতলাতলা লেনে প্রবেশ করতে পারবেন না, তদন্তকারীদের পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে এবং কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করা যাবে না।
এই মামলায় আদালতের রায় ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে তাঁদের নাম জড়ানো হয়েছে। যদিও আদালতের রায়ের পর আপাতত আইনি স্বস্তি মিললেও, মামলার ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশেই চোখ রাখছে রাজনৈতিক মহল।