• রাতারাতি কোটিপতি! ধার করে লটারির টিকিট কিনে ভাগ্যবদল কলমিস্ত্রীর, সত্য জানলে ভিরমি খাবেন ...
    আজকাল | ২২ আগস্ট ২০২৫
  •  

    মিল্টন সেন, হুগলি,২১ আগস্ট: হঠাৎই সমাধান হয়ে গেলো যাবতীয় সমস্যার। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। ধার করে লটারির  টিকিট কেটে হলেন কোটিপতি কলমিস্ত্রী। এবার স্ত্রীর কিডনি অসুখের চিকিৎসা করাবেন কলমিস্ত্রী সুজিত। মাত্র ৩০ টাকার লটারি টিকিট কেটে রাতারাতি কোটিপতি হলেন হুগলির কোন্নগর কানাইপুর কলোনির সুজিত মন্ডল। 

    জানা গিয়েছে, গত সোমবার কোন্নগর বাজার সংলগ্ন একটি লটারি কাউন্টার থেকে ৩০ টাকায় লটারির টিকিট কেনেন সুজিত। ফল বেরোতেই দেখা যায় তিনি যে টিকিট কেটেছিলেন সেই টিকিটেই এক কোটি টাকা পুরস্কার লেগেছে। প্রথমে তিনি নিজের কাছেই বিশ্বাস করতে পারেননি। পরে দেখেন তাঁর টিকিটে কোটি টাকার পুরস্কার লেগেছে। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর অভাবের সংসার। বর্তমানে তাঁর স্ত্রীর কিডনির অসুখ। এর জেরে সুজিত বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন। এমনকী সরকারি হাসপাতালে ভর্তিও রেখেছেন। কিন্তু স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন সেই অর্থ সুজিত কোনওভাবেই যোগাড় করতে পারছিলেন না। 

    অবশেষে এক রাতেই ভাগ্য ফিরে তাঁর। ১ কোটি টাকা লটারিতে জিতে প্রথমেই স্ত্রী'র চিকিৎসা করাতে চান সুজিত। তিনি বলেন, 'পুরস্কার জিতেছি ভালো লাগছে। হিসেব করলে দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ বছর ধরে আমি টিকিট কাটছি। কোনওদিন এক কোটি টাকার পুরস্কার জিতব এটা আশা করিনি। স্ত্রী'র দুটো কিডনি খারাপ। এখন তাঁর চিকিৎসা করাবো।' লটারি বিক্রেতা জানান, 'ধারে টিকিট কাটেন সুজিত।অনেক সময় দোকানে এসে টিকিট পছন্দ করে বলে যান সেটি রেখে দিতে। আমি নাম লিখে টিকিট ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখি। এখনও ১৮০ টাকা পাব ওর থেকে। যে টিকিকে লটারি লেগেছে সেটা আমার ব্যাগেই ছিল। লটারি লাগতেই খবর জানতে পারি। খুব ভালো লাগছিল শুনে। তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে সুজিতকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে টিকিট দিয়ে নিশ্চিন্ত হই। আমি ওকে বলেছি টিকিটের দাম এখনও বাকি আমাকে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে।' 

    লটারি টিকিট সাধারণ মানুষের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই এক ধরনের স্বপ্নপূরণের প্রতীক। অল্প টাকার বিনিময়ে কোটি টাকার মালিক হওয়ার সম্ভাবনা এমন এক আকর্ষণ তৈরি করে, যা অনেক সময় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মানুষকেও টিকিট কিনতে উদ্বুদ্ধ করে। লটারির ভাল দিক হলো, এটি অনেকের জীবন এক লহমায় বদলে দিতে পারে। কারও হয়তো ঘর-বাড়ি ছিল না, হঠাৎ লটারির অর্থে বাড়ি তৈরি হলো, কেউ হয়তো সন্তানের পড়াশোনা চালাতে পারছিলেন না, সেই টাকায় শিক্ষার খরচ মিটলো। আবার অনেক ক্ষেত্রেই লটারির আয় সরকার সামাজিক প্রকল্পে ব্যবহার করে থাকে, যা পরোক্ষভাবে জনকল্যাণে কাজে লাগে।

    তবে এর খারাপ দিকও কম নয়। প্রথমত, লটারির জয়লাভের সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। কোটি টিকিটের মধ্যে হয়তো এক-দুইজনের ভাগ্য খুলবে, বাকিদের কেবল ক্ষতি। দ্বিতীয়ত, অনেক সময় মানুষ লটারির নেশায় পড়ে যায়, বারবার টিকিট কিনতে গিয়ে পরিবারের আর্থিক ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি এক ধরনের জুয়া, যা মানুষকে বাস্তব পরিশ্রম ও পরিকল্পনা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। ফলে জীবনের ভরসা হয়ে দাঁড়ায় শুধু ভাগ্যের খেলা।

    সব মিলিয়ে বলা যায়, লটারির টিকিট সাধারণ মানুষের কাছে যেমন আশা জাগায়, তেমনই হতাশাও তৈরি করে। সঠিক সীমার মধ্যে এটি বিনোদন হতে পারে, কিন্তু অন্ধ নির্ভরতা জীবনে বিপদ ডেকে আনে।

    ছবি পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)