পড়াশোনা না করলে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে, 'ভয়ে' স্কুলেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ছাত্রীর! ...
আজকাল | ২২ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুল চলার সময়েই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক ছাত্রীর। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বাগদা থানার সিন্দ্রানী সাবিত্রী উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই ছাত্রী স্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্কুল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনাটি ঘটে। অসুস্থ ওই ছাত্রীকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বনগাঁ হাসপাতালে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, ওই ছাত্রী এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এত অল্পবয়সী ছাত্রীর জীবনে এমন কী ঘটনা ঘটল যার জন্য সে স্কুলেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে? তার সহপাঠীদের একাংশ দাবি করেছে, বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য ওই ছাত্রীকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে তারা জানতে পেরেছিল। জানা গিয়েছে, বাড়ির এই চাপ ওই পড়ুয়া মেনে নিতে পারেনি। সহপাঠীদের একংশের দাবি, পরিবারের বিয়ে দেওয়ার চাপেই শেষপর্যন্ত এই পথ বেছে নিয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই প্রসঙ্গে ওই পড়ুয়ার মায়ের দাবি, মেয়ে যাতে লেখাপড়ায় মন দেয় সেজন্যই তিনি একথা বলে ভয় দেখিয়েছিলেন। তাও সেতা অতিসাম্প্রতিক ঘটনা নয় বলেই দাবি। তিনি জানিয়েছেন, মেয়েকে তিনি পড়াশোনা না করলে বিয়ের যে কথা বলেন, তাও প্রায় মাস দেড়েক আগে। মেয়ের এই আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনার সঙ্গে বিয়ের ভয় দেখানোর কোনও যোগাযোগ নেই বলেই তিনি মনে করেন। ওই ছাত্রীর মা জানান তাঁদের বাড়িতে যে মশা মারার বিষ রয়েছে, পড়ুয়া তাই খেয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের দিকেও আঙুল তুলেছেন পড়ুয়ার মা। কী অভিযোগ তাঁর? তাঁর অভিযোগ, স্কুলের মধ্যে নজরদারির অভাব। হয়ত কোনও সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়ার পরেই মেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা সবসময় তাঁদের পড়ুয়াদের বলেন, যদি তাদের কোনো সমস্যা হয় সেটা যেন তারা শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের নজরে আনে। কিন্তু যে ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে সে কিছুই জানায়নি। এর পাশাপাশি তাঁদের দাবি, যখন ওই ছাত্রী বিষ খেয়েছিল তখন ক্লাসে কোনো শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না। হঠাৎ করে এবং কেনই বা ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সে বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন বলেই জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে স্থানীয়দের থেকে। কেউ বলছেন বর্তমান এই আধুনিক যুগে কোনও অবস্থাতেই কোনো নাবালিকাকে এভাবে বিয়ের 'ভয়' দেখানো উচিত নয়। কারণ যুগের সঙ্গে মেয়েরা আজ যথেষ্টই এগিয়ে যাচ্ছে। হতে পারে এটা হয়ত তাকে ভয় দেখানোর জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু সেটাই হয়ত তার ভিতরে অন্যভাবে কাজ করেছে। এর পাশাপাশি কেউ কেউ স্কুলের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তাঁদের কথায়, একজন পড়ুয়া যখন স্কুলে ঢুকে পড়ছে তখন তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বর্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর। ফলে স্কুলকে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।