যোগ্যদের ফর্ম ফিলাপের জন্য অতিরিক্ত সময়, এসএলএসটি নিয়ে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২২ আগস্ট ২০২৫
স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর না পেলেও ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি থাকা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের এসএলএসটি পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই সমস্ত শিক্ষকদের ফর্ম ফিল আপ করার জন্য অতিরিক্ত ১০ দিন সময় দেওয়ার কথা বলেছে আদালত। নিয়োগের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা স্থির করবে কমিশন, জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রাজ্য সরকার চাইলে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দিতে পারে।
২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আগেই গোটা প্যানেল বাতিল করেছিল। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী রাতারাতি চাকরি হারান। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকার নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে এবং সেপ্টেম্বরের ৭ ও ১৪ তারিখ পরীক্ষা নেওয়ার দিন ধার্য হয়। ২০২৫ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্কুল শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছিল, স্নাতকে ৫০ শতাংশ থাকার পাশাপশি বিএড থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন, না হলে পরীক্ষায় বসার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন একাধিক স্কুল শিক্ষক। শুধু তাই নয়, টেন্টেড নন এমন শিক্ষকরা আর্জি জানিয়েছিলেন, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার।
বর্তমানে যাঁরা ‘যোগ্য’ হিসেবে স্কুলে পড়াচ্ছেন, তাঁদের অভিযোগ, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত স্কুলে ক্লাস করাতে হচ্ছে তাঁদের। প্রতিদিন স্কুলে হাজিরা ও পড়ানোর চাপের মাঝে নতুন নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে পরীক্ষার দিন পিছোনোর আবেদন জানান। সেই আর্জিতেই এদিন বিচারপতি কুমার স্পষ্ট বলেন, ‘যাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে পড়াচ্ছেন, তাঁদের সবাইকে পরীক্ষার অনুমতি দিতে হবে। রাজ্য সরকার চাইলে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দিতে পারে।’
এদিন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার পর্যবেক্ষণে জানান, ‘একবার পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন বলে এই শিক্ষকদের বাড়তি সুবিধে দিতে হবে, তা কোন আইনে বলা হয়েছে? কাউকে অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হবে না। যাঁরা এখন কাজ করছেন, তাঁদের সকলকে পরীক্ষায় বসতে হবে। তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কারণ তাঁরা অযোগ্য নন। এর পরেও তাঁরা কীভাবে বাড়তি ছাড় চাইছেন? আদালতকে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।’
এদিন বিচারপতিরা কড়া ভাষায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করেন। কমিশনের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের প্রশ্ন, ‘আপনারা কি এখনও অযোগ্যদের রক্ষা করতে চাইছেন? যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের ঢোকানোর চেষ্টা অত্যন্ত হতাশাজনক ও লজ্জাজনক।’ এছাড়া, পরীক্ষার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এনসিটিই-র নতুন নিয়ম অনুযায়ী, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর না থাকলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসা যাবে না। কিন্তু ২০১৬ সালের নিয়োগে ৪৫ শতাংশ নম্বরেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ ছিল। সেই নিয়ম মেনেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর দাবি জানিয়েছিলেন বহু চাকরিরত শিক্ষক। সেই দাবি বৃহস্পতিবার মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট।