জলপাইগুড়িতে জুরাসিক পার্ক! ডাইনোসরের পেল্লায় ডিম দেখে তাজ্জব আট থেকে আশি
বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: যেন সিনেমার জুরাসিক পার্ক। জলপাইগুড়িতে ডাইনোসরের ডিম! খবর চাউর হতেই সেই ডিম দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়। হবে নাই বা কেন! জলপাইগুড়িতে যে ডাইনোসরের ডিম আনা হয়েছে, তাদের নাকি অস্তিত্ব ছিল আজ থেকে সাড়ে ১৩ কোটি বছর আগে। বিজ্ঞানীদের দাবি, জলপাইগুড়িতে যে ডিম আনা হয়েছে, সেটি ‘টাইট্যানোসরাস’ প্রজাতির ডাইনোসরের। যাদের অস্তিত্ব ছিল ১৩৫ মিলিয়ন বছর আগে। প্রতি রবিবার সন্ধ্যায় ওই ডিম দেখতে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শহরের বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ছে জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের মিউজিয়ামে।
কিন্তু জলপাইগুড়ি শহরের নয়াবস্তির ওই মিউজিয়ামে ডাইনোসরের ডিম এল কীভাবে? জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক রাজা রাউত বলেন, আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত প্রদীপ সেনগুপ্ত নামে এক ভূ-বিজ্ঞানীর মাধ্যমে আমরা ওই ডাইনোসরের ডিম পেয়েছি। তিনি মধ্যপ্রদেশে নর্মদা নদীর তীরে একসময় খননকার্য চালিয়েছিলেন। সেই সময় ডাইনোসরের একটি ‘আস্তানা’র খোঁজ পান। সেখান থেকে ডাইনোসরের ডিমের খোঁজ মেলে। তারই একটি বিভিন্ন হাত ঘুরে এখন আমাদের কাছে রয়েছে।
ডাইনোসরের ডিম ছাড়াও বিলুপ্ত ওই প্রাণীর হাড়গোড় রয়েছে জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের মিউজিয়ামে। রয়েছে লুপ্তপ্রায় চ্যাগা মাছ কিংবা নটিলাস শামুক। একসময় জলপাইগুড়ির করলা নদীতে চ্যাগা মাছ পাওয়া যেত। কখনও দেখা মিলত তিস্তায়। এই মাছ আকারে বেশ বড়সড় হতো। নদীতে ভেসে আসা লাশ এরা খুবলে খেয়ে নিত। সেকারণে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা একে ‘রাক্ষুসে’ মাছ বলেই চেনেন। কেউ বলেন ‘ভূতুড়ে’ মাছ। অন্যদিকে, কন্যাকুমারী থেকে নটিলাস শামুক জলপাইগুড়িতে নিয়ে এসেছে সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব। তাদের দাবি, এটিকে ‘জীবন্ত জীবাশ্ম’ বলা হয়। কারণ, এদের সমসাময়িক প্রাণীরা অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যায় হলেও এখনও এরা বেঁচে রয়েছে। কালেভদ্রে তাদের দেখা মেলে। খুবই বুদ্ধিমান স্বভাবের হওয়ায় গ্রিসে এই শামুককে ‘জ্ঞানের প্রদীপ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় বলে দাবি জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদকের। তিনি বলেন, আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হারিয়ে যাওয়া কিংবা লুপ্তপ্রায় প্রাণী, জীবাশ্ম সংগ্রহের চেষ্টা করে চলেছি। সেগুলিকে যথাযথ সংরক্ষণের পাশাপাশি সেসব নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রচার করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাঁর দাবি, ডাইনোসরের ডিম আসার পর থেকে মিউজিয়ামে ভিড় বেড়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি আমজনতাও ওই ডিম দেখতে আসছেন। রবিবার সন্ধ্যায় মিউজিয়াম খুলতেই ভিড় জমে যায়। আমাদের কাছে আরও অনেক দুর্লভ সামগ্রী রয়েছে। কিন্তু জায়গার অভাবে সবটা ঠিকমতো প্রদর্শিত করতে পারছি না।