• জেলা কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে দল ছাড়লেন বিজেপি নেত্রী
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জেলা কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে দল ছাড়লেন ডুয়ার্সের চা বলয়ের বিজেপি নেত্রী আনি চিক বরাইক। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। ওই নেত্রী বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি মেটেলি ইনডং পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী। আদিবাসী ও চা বলয়ে পরিচিত মুখ। সমাজসেবামূলক কাজকর্ম করতেন। ওই কাজের সুবাদে তাঁর জনপ্রিয়তা দেখেই ন’বছর আগে আনিকে দলে টানে বিজেপি। কিন্তু কিছুদিন ধরে দলে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না। এনিয়ে ক্ষোভ থাকলেও এতদিন মুখ খোলেননি তিনি। তবে এবার জেলা কমিটিতে ঠাঁই না হওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

    বৃহস্পতিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে আনি বলেন, যাঁরা দলের জন্য কাজ করেন, বিজেপিতে তাঁদের জায়গা নেই। এখন নেতার ‘কাছের লোক’ হওয়া দরকার। মুখ দেখে জেলা কমিটিতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর তোপ, দু’দিন আগে গঠিত জেলা কমিটিতে এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁরা দশটা লোকও জোগাড় করতে পারবেন না। অথচ, রোদ-ঝড়, বৃষ্টির মধ্যে সারা বছর দলের জন্য কাজ করেও জেলা কমিটিতে জায়গা পেলাম না। সেকারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিজেপির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখব না। আগে যেমন অরাজনৈতিকভাবে মানুষের জন্য কাজ করতাম, সেটাই করব। এভাবে চললে বিজেপি আগামী বিধানসভা ভোটে জলপাইগুড়ি জেলায় গো-হারা হারবে বলেও দাবি আনির।  

    এদিকে, ওই নেত্রীর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ও দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি শ্যামল রায় বলেন, আনি চিক বরাইক আমাদের একজন ভালো কার্যকর্তা। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় কী পোস্ট করেছেন, জানি না। তাঁর সঙ্গে এনিয়ে কথা বলব। 

    শ্যামল বলেন, ওই নেত্রী আগে জেলা সম্পাদক ছিলেন। জেলা কমিটিতে তাঁকে রাখা হয়নি। তিনি হয়তো বড় দায়িত্ব পেতে পারেন। এনিয়ে ক্ষোভ দেখানোর কিছু নেই।

    জেলা সভাপতি যাই বলুন না কেন, কমিটি নিয়ে বিজেপির অন্দরেও ক্ষোভের পারদ বাড়ছে। মেটেলি ব্লকে বিজেপি যুব মোর্চার দু’বারের সভাপতি ও মণ্ডল কমিটির সম্পাদক বিবেক ছেত্রীর গলাতেও ক্ষোভের সুর। বলেন, দলে যাঁরা ভালো কাজ করছেন, তাঁদের কোনও দাম নেই। কয়েকজন নেতা জেলায় বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। আগামী দিনে বিজেপি করব কি না, ভাবতে হচ্ছে। 

    বিজেপির প্রাক্তন জেলা সম্পাদক জলপাইগুড়ি শ্যাম প্রসাদও এবার ঠাঁই পাননি জেলা কমিটিতে। এনিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে তাঁর মনেও। যদিও প্রকাশ্যে বিশেষ কিছু জানাতে চাননি। শুধু বলেছেন, নেতৃত্ব যা ভালো মনে করেছে, সেটাই করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)