সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পিএফ অ্যাকাউন্টে ব্যাপক অসংগতির হদিশ আলিপুরদুয়ারে। অভিযোগ, জেলায় ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পিএফ অ্যাকাউন্টের ক্লোজিং ব্যালেন্সের সঙ্গে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের ওপেনিং ব্যালেন্সের বিস্তর ফারাক। সেই ত্রুটি সংশোধন করছে না স্কুলগুলি। শুধু তাই নয়, বহু স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ফর্ম-১০ দাখিলে উদাসীন। ফলে অনলাইন জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের (জিপিএফ) আওতার বাইরে জেলার ২৪৯টি স্কুল। এনিয়ে অর্থদপ্তর রীতিমতো ক্ষুব্ধ।
একবছর আগে সরকার পোষিত স্কুলগুলির শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জিপিএফ ব্যবস্থা অনলাইন করার কাজে হাত দেয় অর্থদপ্তর। তারা এজন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অনলাইন স্যালারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ওপেনিং ও ক্লোজিং ব্যালেন্স, ফর্ম-১০ প্রভৃতি খতিয়ে দেখছে। সেখানে প্রচুর ত্রুটির হদিশ মিলেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, জিপিএফের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের ফর্ম-১০ নেওয়া হচ্ছে। তাতে ওপেনিং ও ক্লোজিং ব্যালেন্স রয়েছে। নিয়ম অনুসারে সেই বর্ষের ক্লোজিং ব্যালেন্স ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের ওপেনিং ব্যালেন্স। অথচ, সংশ্লিষ্ট দু’টি অর্থের মধ্যেই বিস্তর ফারাক।
মিনি সচিবালয় উত্তরকন্যায় অর্থদপ্তরের ডিরেক্টরেট অব পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যান্ড গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের শাখার এক অফিসার জানান, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পিএফ অ্যাকাউন্টের ক্লোজিং ও ওপেনিং ব্যালেন্সের ‘মিসম্যাচ’ নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির আলিপুরদুয়ারের সভাপতি ভাস্কর মজুমদার বলেন,শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পিএফ অ্যাকাউন্টের মিসম্যাচ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে জানানো হয়েছে। শিক্ষাদপ্তরের একাংশ জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট জেলায় ম্যানুয়ালি পিএফের ‘লেজার বুক’ পরিচালনা করেছে স্কুলগুলি। সেজন্যই এমন অসংগতি রয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রবিনা তামাং বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে, উত্তরবঙ্গের পাঁচটি শিক্ষা জেলার ১৭১৭টি স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী জিপিএফের আওতায় এসেছেন। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের ২৪৯টি এবং মালদহের ৫৭৭টি স্কুল সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আওতায় আসেনি। চলতি মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে জটিলতা তৈরি হবে। সেপ্টেম্বর মাসে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২০২৩-’২৪ ও ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষ দু’টির পিএফের সুদ প্রদান করার উদ্যোগ থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, জিপিএফের জন্য মালদহ জেলা তোড়জোড় শুরু করলেও আলিপুরদুয়ারে হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ারের বিদ্যালয় পরিদর্শক বলেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই ফর্ম প্রদান করা হবে।