• ইংরেজ আমলের দু’শো সহ সাড়ে ১৫ হাজার বইয়ে সমৃদ্ধ রাধিকা লাইব্রেরি
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: ইংরেজ আমলের স্মৃতি আজও ভেসে ওঠে ময়নাগুড়ির রাধিকা লাইব্রেরিতে। ১৯১০ সালে স্থাপিত এই গ্রন্থাগার ময়নাগুড়ি শহরের থানা রোডের উল্টোপাশে। এই গ্রন্থাগারে এখনও রয়েছে ইংরেজদের সময়কার পুস্তকের সম্ভার। প্রায় দু’শোটি এমন বই আছে, যেগুলি ১০০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সবক’টি বই ইংরেজিতে। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ পুস্তকগুলি সংরক্ষণ করে রেখেছে। এখনও এই গ্রন্থাগারে এলে দেখা যাবে ইংরেজ আমলের পাখার হুক। 

    লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক কৃষ্ণকান্ত রায়। দপ্তরি কাম বুক বাইন্ডার পদে আছেন প্রদীপকুমার সরকার। লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ময়নাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী। সম্প্রতি গ্রন্থাগারটির নতুন বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। নতুন ঘরে পাঠকরা বসেন। তবে, পুরনো বিল্ডিং ময়নাগুড়ির এক ঐতিহ্য হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। রাধিকা লাইব্রেরিতে বর্তমানে সাড়ে ১৫ হাজার বই আছে। এই গ্রন্থাগারে পাঠক ৬৫০ জন। 

    গ্রন্থাগারিক কৃষ্ণকান্ত রায় জানান, একের দশকে ময়নাগুড়ি ব্লক বলে আলাদা কিছু ছিল না। জলপাইগুড়ি ছিল। এখন যেখানে বিএলআরও অফিস, আগে সেটা ছিল খাসমহল। সেই সময় জমিদারদের কাছ থেকে খাজনা সংগ্রহ করতেন রাধিকানাথ নন্দী। তিনি জমিদারদের বলেছিলেন লাইব্রেরি গড়ার জন্য জমি দিতে। তাঁর কথা শুনে জমিদাররা একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। পরবর্তীতে জমিদাররা একটি ফান্ড তৈরি করেন। গড়ে ওঠে লাইব্রেরি। প্রথমে এর নাম ছিল পাবলিক লাইব্রেরি। প্রথম গ্রন্থাগারিক ছিলেন দীনআলি আহমেদ। তিনি মাসে এক আনা বেতনে চাকরি করতেন। যেহেতু রাধিকানাথ নন্দীর চেষ্টায় লাইব্রেরি গড়ে ওঠে, পরবর্তীতে এর নাম হয়ে রাধিকা লাইব্রেরি। 

    ২০০৪ সালে রাধিকা লাইব্রেরির প্রথম তলা হয়েছিল। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে দ্বিতীয় তলা করা হয়েছে। এখনও ইংরেজ আমলের প্রচুর ছাপ রয়েছে এই লাইব্রেরিতে। অনন্তদেব অধিকারী বলেন, শুনেছি এখন যেখানে  লাইব্রেরি, সেখানে ইংরেজদের একটি ক্লাবঘর ছিল। এই লাইব্রেরি ময়নাগুড়ির একটি ইতিহাসের সাক্ষী। আমরা এর উন্নয়নে কাজ করছি। 

     রাধিকা লাইব্রেরি। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)