একের পর এক নাবালিকা ঘরছাড়া পলাশীপাড়ার বাউড় নিয়ে চিন্তা বাড়ছে
বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, তেহট্ট: সম্প্রতি পলাশীপাড়া থানা এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে একের পর এক নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন পুলিস, প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে এই থানারই বাউড় গ্রামে। তাই মেয়েদের সচেতন করতে ওই গ্রামে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিস প্রশাসন লাগাতার সচেতনতা শিবির করছে। তারপরও নাবালিকারা পালিয়ে যাচ্ছে।
তেহট্ট দুই ব্লকের বিডিও ধ্রুবানকুর ঠাকুর বলেন, আমরা একটা টিম গঠন করছি। তাতে আমাদের প্রতিনিধি যেমন থাকবে তেমন স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিস সহ অন্য দপ্তরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। সেই টিম গ্রামে গিয়ে নাবালিকাদের বোঝাবে। অভিভাবকদেরও সচেতন করবে। সেই সঙ্গে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিকগুলি বুঝিয়ে বলবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশীপাড়া থানা এলাকায় নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ার সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই থানার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জুলাই মাসে প্রায় ৬০ জন নাবালিকা ঘর ছেড়েছিল। পুলিস ও এলাকার কিছু স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসন সবচেয়ে বেশি বিব্রত বাউড় গ্রাম নিয়ে। কারণ গত এক মাসে ওই গ্রাম থেকেই ২০ জন নাবালিকা স্কুল পড়ুয়া পালিয়ে গিয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এর প্রধান কারণ সোশ্যাল মিডিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরিচিত যুবকদের সঙ্গে তাদের পরিচয় হচ্ছে। তারপর তারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। অনেক নাবালিকা প্রলোভনে পড়ে ঘর ছাড়ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নাবালিকা ও যুবকের পরিবারের লোকজনকে। তার থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে স্কুলে যাওয়ার নাম করে ওই নাবালিকারা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। পরে স্কুলের পোশাক ছেড়ে অন্য জামা পরে পরিচিত বন্ধু কিংবা যুবকের সঙ্গে তারা চলে যাচ্ছে। এতে স্কুলের বদনাম হচ্ছে। মহাত্মা গান্ধী স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সুদীপ্তা বিশ্বাস বলেন, খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা। পুলিস ও প্রশাসন সবসময় সাহায্য করছে। তারা স্কুলে সচেতনতা শিবির করছে। পাশাপাশি বাউড় সহ অন্যান্য গ্রামে অভিভাবক ও বিশেষ করে পড়ুয়াদের সচেতন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পলাশীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুমিত ঘোষ বলেন, একাধিক নাবালিকা বিভিন্ন কারণে ঘরছাড়া হচ্ছে। তাদের সবাইকে উদ্ধার করাও হচ্ছে। কিন্তু, তাতেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। কারণ তারমধ্যে অনেকে আবার পালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য সচেতন করতে বড় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক গ্রামে ও স্কুলে শিবির করে সচেতন করা হচ্ছে।