কৌশিকী অমাবস্যায় সারারাত খোলা থাকবে তারাপীঠ মন্দির
বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে, আজ শুক্রবার সারারাত তারাপীঠ মন্দির খোলা থাকবে। তারা অঙ্গে দেবী কৌশিকীকে পুজো দিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বামাক্ষ্যাপার সাধনাস্থলে দূর-দূরান্তের ভক্ত সমাগম হতে শুরু করেছে। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই ভিড় বেড়েছে। এদিন দফায় দফায় ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখেন টিআরডিএ-র চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তিথি শুরু হলেই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে দেবীকে পুজো নিবেদন করা হবে। তন্ত্র ও শাস্ত্রমতে কৌশিকী অমাবস্যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কঠিন সাধনায় এই দিনে আশাতীত ফল মেলে বলে অনেকে মনে করেন। দেবী দুর্গার দেহকোষ থেকে দেবী কৌশিকী অবতার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেই দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। তারপর থেকেই এই অমাবস্যার নাম হয় কৌশিকী অমাবস্যা। এই দিনে দেবী তারা মর্ত্যধামে আবির্ভূত হন। ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যার দিন বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাই বিশেষ এই তিথিতে দেবীর পুজো দিয়ে পুণ্যলাভের আশায় লক্ষ লক্ষ ভক্ত ভিড় জমান। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয়ে কৌশিকী অমাবস্যা তিথি থাকছে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে যাবে। পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে আজ সারারাত মন্দির খুলে রাখা হবে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মাকে ডাকের সাজে সাজিয়ে সন্ধ্যারতি ও শীতল ভোগ নিবেদন করা হবে। গভীর রাতে মাকে খিচুড়ি, পোলাও, কারনবারি, পাঁঠার মাংস দিয়ে ভোগ দেওয়া হবে। রাত আড়াইটা নাগাদ দেবী আধঘণ্টার জন্য বিশ্রাম নেবেন। ভোর ৩টের সময় দেবীর স্নান ও শীতলভোগ নিবেদনের জন্য ফের গর্ভগৃহ খুলে দেওয়া হবে। মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব সাহা বলেন, উত্তরবাহিনী দ্বারকা নদে স্নান করে পুজো ও যজ্ঞ করলে কুম্ভমেলায় স্নানের সমান পুণ্য হয়। পাপ বিনাশ হয়। অশুভ শক্তির পরাজয় হয়ে শুভশক্তির উদয় হয়। দ্বারকা নদে স্নান করতে নেমে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মহাশ্মশানে সাধু, তান্ত্রিকরা সারা রাত ধরে তন্ত্রসাধনা করবেন। ধুনি জ্বালিয়ে ধ্যানমগ্ন থাকবেন তাঁরা। প্রশাসনের মতে, প্রায় পাঁচ লক্ষ ভক্ত সমাগম ঘটবে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্র ও শনিবার কোনও ট্রেনেই রামপুরহাট পর্যন্ত রিজার্ভেশন সিট খালি নেই। স্পেশাল ট্রেন, অসংরক্ষিত কামরা ও সড়কপথে প্রচুর মানুষ আসবেন। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় তারাপীঠের আটলা মোড়ে পুলিসের স্থায়ী সহায়তা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন এডিজি অশোক প্রসাদ। ছিলেন ডিআইজি(বর্ধমান রেঞ্জ) শ্যাম সিং প্রমুখ।