• খুন-ডাকাতিতে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবেন না গোয়েন্দা প্রধান
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • সুজিত ভৌমিক, কলকাতা: খুন, ডাকাতি, অ্যাসিড হামলা, তোলাবাজি, অপহরণ, সুপারি কিলিংয়ের মতো সংগঠিত ও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে আর তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবেন না কলকাতা পুলিসের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম বা গোয়েন্দা প্রধান। ১১ আগস্ট পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা একটি লিখিত নির্দেশিকা জারি করে এই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে খুন, ডাকাতি সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১১ নম্বর ধারায় সংগঠিত ও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্তের নির্দেশ দেবেন অতিরিক্ত পুলিস কমিশনার। 

    সিপি’র এই ‘অভিনব’ নির্দেশ ঘিরে লালবাজারের পাশাপাশি রাজ্যের আইপিএস মহলেও তীব্র গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধানের ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া শুরু হল? বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলেও কলকাতা পুলিসের শীর্ষকর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিস মহলের একাংশের ব্যখ্যা, ‘গোয়েন্দা বিভাগের  দক্ষতা, দায়বদ্ধতা ও নজরদারি বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।’ 

    কী বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়? লালবাজার সূত্রে খবর, এখন থেকে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের পাঠানো বিষয়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জিএম বা গেজেটেড পাবলিক সার্ভেন্ট জড়িত আছেন, এমন ঘটনার তদন্ত এবং নিষ্পত্তির নির্দেশ দিতে পারবেন একমাত্র সিপি। ৩ কোটি টাকার অর্থনৈতিক অপরাধ, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেবেন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম। কিন্তু প্রতারণার টাকার অঙ্ক ৩ কোটি ছাড়ালেই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন অতিরিক্ত পুলিস কমিশনার। ১-৩ কোটি টাকা পর্যন্ত সাইবার প্রতারণার অভিযোগগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম। উল্লেখ্য, ১৫০ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ কলকাতা পুলিসের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম পদটি পুলিস কমিশনারের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতকাল কলকাতা পুলিসে সংগঠিত ও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্ত সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম। একটা সময় পদটি ছিল ডিসি মর্যদার। বর্তমানে তা ডিআইজি পদমর্যাদার। 

    অতীতে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান পদে কাজ করে যাওয়া আইপিএসদের সিংহভাগের বক্তব্য, সিপির এই নির্দেশিকা ডিআইজি র‌্যাঙ্কের আইপিএস অফিসারের পদমর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এর ফলে গোয়েন্দা বিভাগে একাধিক ‘সুপার পাওয়ার সেন্টার’ তৈরি হবে। অফিসারদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়তে পারে। তাঁরা আরও বলছেন, ‘যদি মনে হয়, ডিআইজি পদমর্যাদার গোয়েন্দা প্রধানকে দিয়ে কাজ হচ্ছে না, তবে পদটি অতিরিক্ত পুলিস কমিশনার পর্যায়ে উন্নীত করা উচিত ছিল।’
  • Link to this news (বর্তমান)