• মাত্র দু’ঘণ্টায় ১০০ মিমি বৃষ্টি, বিপর্যস্ত শহরে চরম ভোগান্তি
    বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মাত্র দু’ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি! আর তাতেই বৃহস্পতিবার ভাসল শহর কলকাতা। আচমকা অন্ধকার করে আসা দুপুর, আর তারপরই মুষলধারে বৃষ্টি। আধ ঘণ্টায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল দক্ষিণ থেকে মধ্য কলকাতা। বাদ গেল না সল্টলেক-নিউটাউনও। একটা সময় বৃষ্টির তীব্রতা এতটাই ছিল যে, পাঁচ মিটার দূরত্বের কিছু দেখা কার্যত অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিল। হার মেনেছে ছাতাও। তবে এই দুর্যোগ যদি হাড়ে হাড়ে কেউ টের পেয়ে থাকে, তা দক্ষিণ কলকাতার মানুষ। ক্যামাক স্ট্রিট, ভবানীপুর, হাজরা, বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, তপসিয়া, যোধপুর পার্ক, গড়িয়া সহ দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। লকগেট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রাস্তায় সন্ধ্যা পর্যন্তও জল দাঁড়িয়েছিল। দুপুরে শুরু হওয়া বৃষ্টি এবং তার জেরে ভোগান্তির জের চলেছে বিকেলে অফিস ছুটির সময় পর্যন্ত। জল জমার কারণে বহু রাস্তায় বাস কমে যায়। ট্রাফিক এতটাই ধীর হয়ে গিয়েছিল যে, শহরের প্রায় সব প্রান্তই বিপুল যানজটের মুখে পড়ে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-এমজি রোডও তার বাইরে ছিল না। উত্তর কলকাতায় ‘জল জমা বর্ষণ’ না হলেও অল্পবিস্তর ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে মহানগরের ওই অংশেও।

    কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের তথ্য জানাচ্ছে, এদিন শহরের বুকে মূলত পাঁচটি পাম্পিং স্টেশন জোনেই অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে বালিগঞ্জ এবং যোধপুর পার্ক এলাকাতেই বেলা ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত ১০০ মিমির বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অন্যদিকে, ধাপা লকগেট, গড়িয়া কামডহরি ও তপসিয়া পাম্পিং স্টেশন জোনে যথাক্রমে ৭২, ৭৭ ও ৯৯ মিমি বৃষ্টিপাত নথিভুক্ত হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এত বেশি বৃষ্টি হওয়ার ফলে দক্ষিণ কলকাতা, ইএম বাইপাস সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা ও গড়িয়া—গোটা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। খাস বাইপাসের উপরও ঢেউ খেলতে দেখা যায়। বরাহনগর, কামারহাটি, সোদপুর এলাকাতেও বিটি রোডের উপর জল দাঁড়িয়ে যায়।

    বেলা ৩টের পর বৃষ্টির তীব্রতা কমলে জল নামতে শুরু করে। যদিও তা ছিল বেশিরভাগটাই বড় রাস্তায়। অলিগলি ও পাড়ার ভিতরের রাস্তার জল নামতে কোথাও কোথাও মধ্যরাত গড়িয়ে গিয়েছে। তবে এরই মধ্যে পুরসভার নিকাশি বিভাগের কর্মী-আধিকারিকদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আশুতোষ মুখার্জি রোডে পুরসভার ট্যাঙ্কার লাগিয়ে জমা জল তোলা হয়েছে। এই বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং এদিন পামারবাজার পাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্যই জল নামাতে অনেকটা সময় লেগে গেল। কর্মীরা খুব ভালো কাজ করেছেন।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)