'ভারতের মুক্তি সংগ্রামে বাংলা', চুঁচুড়ায় চার দিনব্যাপী প্রদর্শনী...
আজকাল | ২২ আগস্ট ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: রুবি, ঊর্মি, নওরিন, তমালরা অপার বিস্ময় তাকিয়ে ছিল টাঙানো ছবিগুলির দিকে। যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ওরা, চোখের সামনে যা কিছু, সব পড়ে, জেনে কেমন যেন এক ঘোরের মধ্যে। বিষয় সম্পর্কে একেবারেই যে জানত না তেমনটা নয়, তবে এত বিস্তারিত জানত না। যখন জানছে, তখন আবেগ বাধ মানছে না। অবক হওয়ার পালা প্রতি লাইনে যেন।
ওরা পড়ছিল মন দিয়ে। যত পড়ছিল এক লাইন, দু' লাইন, অবাক হওয়া বাড়ছিল তত। ইতিহাসের পাতা থেকে এক একটা কাহিনী পড়ে নিজেদের বাংলাকে যেন নতুন করে জানছিল ওরা। পড়ছিল যত, যেমন বাড়ছিল মুগ্ধতা, বাড়ছিল প্রশ্ন। ওদের সঙ্গে এসেছিলেন শিক্ষকরা। গোটা বিষয়টা আরও সহজ, বোধগম্য করে তুলতে তাঁরা মাঝে মাঝেই বিষয়গুলিকে আরও ভাল করে পড়ে পড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন ওদের।
রুবি, ঊর্মি, নওরিন, তমাল। ওরা সবাই হুগলির কোনও না কোনও স্কুলের ছাত্রছাত্রী। ভারতের মুক্তি সংগ্রামে বাংলার যে এই বিপুল ভূমিকা, সেটা প্রদর্শনীতে না এলে ওরা জানতে পারত না। কারণ এখনও ওই প্রসঙ্গে বই খুঁটিয়ে পড়া হয়ে ওঠেনি ওদের। জানা হয়নি এমন কতকিছু, যা জানতে পেরেছে ওই প্রদর্শনীতে গিয়ে।
ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটাতে ভারতের মুক্তি সংগ্রামে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। লড়াই করেছিলেন আমরণ। বাংলার বুকে জন্মেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু, সূর্যসেন, বাঘাযতীন, ঋষি অরবিন্দ, বিনয় -বাদল- দীনশ। তাঁদের সেই জীবন যুদ্ধ, দেশের জন্য আত্মবলিদানের কথাই তুলে ধরা হয়েছে এই প্রদর্শনীতে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত, হুগলি জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায়, চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে হয়ে গেল এক প্রদর্শনী। 'ভারতের মুক্তি সংগ্রামে বাংলা' শীর্ষক এই প্রদর্শনী চলবে চারদিন ধরে। ২০ থেকে ২৩ আগস্ট, চার দিনের এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে সিপাহী বিদ্রোহ, বাংলার নবজাগরণ, বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, প্রভৃতি ঐতিহাসিক ঘটনা।
ছবি, সেই সঙ্গে লেখা বিস্তারিত ওই ছবি প্রসঙ্গে। লেখা ও ছবির মাধ্যমে যেন এক জীবন্ত দলিল। ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে সম্মান এবং স্মরণীয় করে রাখতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন। আর এই প্রদর্শনী শিক্ষনীয় হয়ে রইল স্থানীয় পড়ুয়াদের কাছে। প্রদর্শনীতে বিষয় সাজুজ্য রেখে নানা তথ্যের উল্লেখের পাশাপাশি, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আবহাওয়াটি সজ্জার মাধ্যমে বেশ ফুটিয়ে তুলেছে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, হুগলি।