• পরীক্ষার ১১৭ দিনের মাথায় ফলপ্রকাশ জয়েন্টের, প্রথম কলকাতার ডন বস্কোর অনিরুদ্ধ, উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী...
    আজকাল | ২২ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরীক্ষার ১১৭ দিনের ফলপ্রকাশ হল জয়েন্ট এন্ট্রান্সের। এই বছর জয়েন্ট হয়েছিল গত ২৭ এপ্রিল। এইবারের জয়েন্ট পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন কলকাতার ডন বস্কো স্কুলের অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন নদিয়ার কল্যাণী সেন্ট্রাল মডেল স্কুলের সাম্যজ্যোতি বিশ্বাস এবং তৃতীয় স্থানে কলকাতার রুবি পার্ক দিল্লি পাবলিক স্কুলের দিশান্ত বসু। চতুর্থ হয়েছেন কলকাতা রুবি পার্ক, দিল্লি পাবলিক স্কুলের অরিত্র রায়, পঞ্চম দুর্গাপুরের পূর্ভ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ত্রিষাণজিৎ দলই, ষষ্ঠ হয়েছেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের সাগ্নিক পাত্র. বর্ধমান মডেল স্কুলের সম্বিত মুখোপাধ্যায়, ডিএভি মডেল স্কুল, খড়গপুরের অর্চিস্মান নন্দী অষ্টম হয়েছেন। রাজারহাটের দিল্লি পাবলিক স্কুলের প্রতীক কুণ্ডু নবম এবং বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের অর্ক ব্যানার্জি দশম হয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এক্স হ্যান্ডেলে উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তোমাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও জানাই আমার অভিনন্দন। যাঁরা কোনো কারণে ভালো ফল করতে পারেননি, তাঁদের মন খারাপ না করে ভবিষ্যতে যাতে ভাল হয় তার প্রস্তুতি নিতে বলব। আইনি জটিলতায় ফলপ্রকাশে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার একটু দেরি হল। কিন্তু আমি বিশ্বাস রাখি, সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে আগামীর দিনগুলিতে তোমরা আরো সফল হবে এবং বাংলার মুখ উজ্জ্বল করবে।' 

    জয়েন্ট এন্ট্রার্স পরীক্ষায় ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এদিন স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফলপ্রকাশের ক্ষেত্রে জট কাটে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এদিন এই নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। তারপরেই প্রকাশিত হল রাজ্য জয়েন্টের ফলাফল। রাজ্যের জয়েন্ট পরীক্ষা হয়েছিল চারমাস আগে। তারই মধ্যে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হয় মামলা। হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। জটিলতা না কাটলে জয়েন্টের কোনও ফলপ্রকাশ করা যাবে না। সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়ে রাজ্যের মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পরীক্ষা দেওয়া কয়েক লক্ষ পড়ুয়া। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।

    সেখানেই শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেওয়া হয়। কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর এদিন অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। ফলে রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ফল প্রকাশে আপাতত কোনও বাধা থাকল না।  গত ৭ অগস্ট জয়েন্ট এন্ট্রাসের ফল প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু মামলায় ওবিসি জটের কারণে ফলপ্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। ২০১০ সালের পর রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ফলে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও জটিলতা দেখা যায়। ২০২৪ সালের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ওবিসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন প্যানেল তৈরি করতে বলেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১০ সালের আগে ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতে নতুন করে মেধাতালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়।

    যাদের ২০১০ সালের পরে ওবিসি সংশাপত্র হয়েছে, তারা কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ পাবেন না। সেই কথাও জানানো হয়। ফলে দেখা যায় জটিলতা। কলকাতা হাই কোর্টের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চে জয়েন্টের বিষয়েও আবেদন করা হয়। সেখানেই এদিন হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হাই কোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের সওয়াল, ‘‘অবিশ্বাসযোগ্য! স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ।’’ রাজ্যের আইনজীবীদের প্রশ্ন ছিল, ‘‘কী ভাবে এটা করা যায়?’’ বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে। সেই মামলার সঙ্গেই জয়েন্টের ফলপ্রকাশ সংক্রান্ত মামলাটি জুড়ে ছিল।

    তবে রাজ্যের তরফে জয়েন্টের ফলসংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে জয়েন্টের ফলপ্রকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হয়। সেই শুনানিতেই হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। জয়েন্ট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। উল্লেখ্য, নির্দেশ দেওয়ার সময় বিচারপতি চন্দ জানিয়েছিলেন, ওবিসি পড়ুয়াদের জন্য পূর্বের মতো ৭ শতাংশ সংরক্ষণই বরাদ্দ থাকবে। তা ছাড়া, নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। তালিকা প্রকাশ করলে তা করতে হবে পুরনো বিধি মেনে। অর্থাৎ, ২০১০ সালের আগের ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতেই নতুন মেধাতালিকা তৈরি করতে হবে।
  • Link to this news (আজকাল)