•  স্ত্রীর হৃৎপিণ্ড কেটে বের করে হাতে নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বামী, শিউরে উঠলেন শহরবাসী ...
    আজকাল | ২২ আগস্ট ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধারাল অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে খুনের পর শরীর থেকে তাঁর হৃৎপিণ্ড কেটে বের করল স্বামী। এরপর সেই হৃৎপিণ্ড হাতে এলাকায় ঘুরতে শুরু করল সে। শুক্রবার সকালে আচমকা এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠলেন ময়নাগুড়ির বাসিন্দারা। পুলিশের কাছে খবর গেলে তারা এসে গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত স্বামী রমেশ রায়কে। দেহের অংশগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃতা দীপালি রায় (৪৫) বলে জানা গিয়েছে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি এলাকায় ব্যাংকান্দি এলাকায় বাড়ি রমেশ ও দীপালির। এদিন সকালে তার এই কীর্তি দেখে হতবাক সকলেই‌।  ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নীলিমা রায় বলেন, এদিন সকাল ৮টা নাগাদ তাঁকে এক যুবক ফোন করে বলেন, রমেশ রায় একটি ব্যাগের মধ্যে তাঁর স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন কাটা অংশ একটি ব্যাগে ভরে তাঁদের বাড়ি নিয়ে এসে ব্যাগ খুলে দেখিয়েছে‌‌। বাড়ির লোক বেজায় ভয় পেয়ে গিয়েছে। তারা কোনোরকমে রমেশকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এর পরেই পঞ্চায়েত প্রধানকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়‌‌। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু রায়, শ্যামল রায়রা জানান, এদিন রক্তাক্ত অবস্থায় রমেশকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। খোঁজ নিতে এরপর তার বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ঘরের বিছানায় রক্তের ছাপ‌‌। এরপরেই বিষয়টি পরিষ্কার হয় সকলের কাছে‌। তাঁরা বুঝতে পারেন স্ত্রীকে খুনের পর তাঁর শরীর থেকে হৃৎপিণ্ড-সহ অন্যান্য অঙ্গ কেটে সেগুলি ব্যাগে ভরে রমেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রমেশের বাড়ির আশেপাশে রক্তাক্ত বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়‌। ভয়ে অনেকেই এখন তার বাড়ির সামনে যেতে চাইছেন না। ইতিমধ্যেই খবর যায় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশের কাছে। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে আসার আগেই এলাকা থেকে চম্পট দেয় রমেশ। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। শেষপর্যন্ত শিঙিমারি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। লুকিয়ে থাকার সময়েও রমেশের কাছে ছিল স্ত্রীর হৃৎপিণ্ড। পুলিশ সেটি ছাড়াও তার কাছ থেকে উদ্ধার করেছে একটি ধারাল অস্ত্র। তবে এভাবে খুনের পর পুলিশও কিছুটা হতচকিত। তাদের ধারণা হয় অভিযুক্ত মানসিক রোগগ্রস্ত অথবা স্ত্রীর প্রতি তার তীব্র ঘৃনা ছিল। যে কারণেই এই নৃশংস ঘটনা সে ঘটিয়েছে। যেখানে রমেশের বাড়ি সেখানকার লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ রমেশের সম্পর্কে জানতে চাইছে। সেইসঙ্গে তার স্ত্রীর বাপের বাড়িও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। মৃতার দেহের অঙ্গগুলি জোগাড় করে সেগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এবিষয়ে ময়নাগুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুবল ঘোষ জানান, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে।

    প্রসঙ্গত, আরেক নৃশংস হত্যাকাণ্ড হুগলিতে। স্ত্রীকে খুন করে দিদিকে প্রনাম করলেন প্রৌঢ়। এরপর নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘিরে হুগলির কোন্নগর মাস্টারপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন্নগর পুরসভার প্রাক্তন কর্মী অশোক চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রী সবিতা চট্টোপাধ্যায়কে(৫৮) খুন করে পুলিশে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর স্ত্রীর দেহ বাড়িতে রেখে দরজায় তালা দিয়ে দিদির কাছে যান তিনি। এরপর দিদি চন্দনা চট্টোপাধ্যায়কে প্রণাম করেন।

    জানা গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। অশোকের দিদি চন্দনা, খুরতুতো দাদা সহৃদ, বৌদি লীনা চট্টোপাধ্যায়রা জানান, সম্প্রতি দু'জনের মধ্যে চরম অশান্তি হয়। নিত্যদিন দু'জনে ঝগড়া করতেন। যা প্রতিবেশীরাও টের পেয়েছিলেন। বর্তমানে কোনও কাজই করতেন না অশোক। বাজারে ধার দেনাও করেছিলেন। তা নিয়েই দম্পতির মধ্যে অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল, নাকি অন্য কারণে, সেটা তাঁদের জানা নেই।

    জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন তুমুল অশান্তি হয় দু'জনের মধ্যে। সকালে অশোক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়, পাশেই থাকা দিদির বাড়িতে যান। ত্রিবেনীতে থাকেন তাঁর ছোড়দি। তাঁকে ফোন করে জানান, তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন। এরপর অশোকের ছোড়দি তাঁদের বড়দাকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানতে চান। এরপরই খুনের বিষয়ে জানতে পারেন তাঁরা। 

    স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ দরজার তালা ভেঙে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পুলিশের অনুমান, মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
  • Link to this news (আজকাল)