হেনস্তা রুখতে নথি তৈরি রাখছে পরিযায়ীর পরিবার, একমাসে দু’হাজারের বেশি এনওসি পলাশীপাড়া থানার
বর্তমান | ২২ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, তেহট্ট: বাইরের রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় কথা বলার জন্য হেনস্তা হতে হচ্ছে। সেই হেনস্তা থেকে বাঁচার জন্য আধার, ভোটার কার্ড সহ বিভিন্ন পরিচয়পত্র যেমন তাঁরা সঙ্গে রাখছেন, তেমনই পরিযায়ী শ্রমিকদের থানা থেকেও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেওয়ার ভিড় বাড়ছে। গত এক মাসে নদীয়ার পলাশীপাড়া থানা থেকে দু’হাজারের বেশি এমন শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে পুলিস সুত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশীপাড়া থানা এলাকার রুদ্রনগর, পলশন্ডা, বারুইপাড়া, গোপীনাথপুর সহ বিভিন্ন এলাকার যুবক থেকে শুরু করে স্বামী, স্ত্রী এমনকি, তাঁদের নাবালক ছেলে, মেয়েরাও ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন দিল্লি, হরিয়ানা, কর্ণাটক, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কেরল সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। আগে কোনও সমস্যা না হলেও বর্তমানে এসব পরিযায়ী শ্রমিকরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে দেগে দিয়ে তাঁদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেক পরিযায়ী শ্রমিক তাঁদের আধার ও প্যান কার্ড দেখালেও ছাড় পাননি। তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই কর্মস্থানে এভাবে হেনস্তা হওয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকরা আতঙ্কিত। বাইরের রাজ্যে যাতে কোনওভাবে হেনস্তা করা না হয়, সেই জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিচ্ছেন। গত এক মাসে দু’হাজারেরও বেশি এই শংসাপত্র পলাশীপাড়া থানা থেকে দেওয়া হয়েছে।
পলাশী পাড়া থানায় এই সার্টিফিকেট নিতে এসেছিলেন রুদ্রনগরের প্রেম চাঁদ শেখ, পলশন্ডার তৌফিক শেখ বা বারুইপাড়ার মোজাফর হোসেন শেখ। তাঁরা বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে ভিনরাজ্যে কাজ করি। এতদিন সেখানে কাজে গিয়ে কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে বাংলায় কথা বললেই আমাদের বাংলাদেশি বলা হচ্ছিল! আমাদের সেখানে নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। কাজেই নিজেদের সুরক্ষায় আমরা বাড়ি গিয়ে স্থানীয় থানা থেকে আধার, জমির দলিল, ভোটার কার্ডসহ যাবতীয় নথি নিয়ে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়ে নেব।
পুলিস সুত্রে জানা গিয়েছে, নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন জমা নেওয়ার পর তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে স্থানীয় থানায় কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না, তাও দেখা হচ্ছে। এরপরই মিলছে সেই সার্টিফিকেট।