বাঙালি বলে দাহ করতেও বাধা! তামিলনাড়ুর একাধিক শ্মশান ঘুরে টাকিতে এনে সৎকার পরিযায়ী শ্রমিকের
প্রতিদিন | ২২ আগস্ট ২০২৫
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: ভিনরাজ্যে মারা গিয়েছিলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু বাঙালি হওয়ায় সেই রাজ্যে দাহ পর্যন্ত করা গেল না! শেষপর্যন্ত কয়েকশো মাইল গাড়িতে করে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হল বাংলার বাড়িতে। সেখানেই দেহ দাহ করা হল। মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার টাকি পুরসভা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, টাকি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন নীলমণি ঘোষ(৫৩)। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তামিলনাড়ু রাজ্যে একটি কারখানায় কাজ করছিলেন। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশি তকমা দিয়ে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠেছে ভিনরাজ্যে। বাংলাদেশে পুশব্যাক করে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তামিলনাড়ুতে বাঙালি শ্রমিককে দাহ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
জানা গিয়েছে, নীলমণি ঘোষ তামিলনাড়ুতে কারখানায় কাজ করছিলেন। কর্মরত অবস্থায় গত ১৯ তারিখ কারখানার সিঁড়ি দিয়ে পড়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় বলে খবর। নীলমণির সহকর্মীরা ও কারখানার মালিকরা বসিরহাটের টাকিতে থাকা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। পরিবারের সম্মতিতেই তামিলনাড়ুর স্থানীয় শ্মশানে তাঁকে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, নীলমণি বাঙালি বলে সেখানে দাহ করতে দেওয়া হয়নি। আরও বেশ কয়েকটি শ্মশানেও একইরকম অভিজ্ঞতা হয় তাঁদের। কোনও জায়গাতেই মৃতদেহ সৎকার করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
শেষপর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলে কারখানার মালিক ও অন্যান্যরা একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেন। তাতে করেই বসিরহাটের টাকিতে মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির কাছেই শ্মশানে ওই শ্রমিকের মৃতদেহ দাহ হয়েছে। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।