আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ কলকাতার পঞ্চসায়র থানা এলাকায় এক বহুতল আবাসন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক বৃদ্ধার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতার নাম বিজয়া দাস (৭৫)। শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এরপর পঞ্চসায়র থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবাসনের ওই ফ্ল্যাটের ঘর থেকে বৃদ্ধার নিথর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরের মেঝেতে ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ পড়েছিল। আর তাঁর হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। বিজয়া দেবী ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁর পরিবারের কেউ শহরে আছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা শুরু করেছে এবং প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পাশাপাশি মৃতার ফোন রেকর্ড ও ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে। আপাতত আত্মহত্যা নাকি খুন—সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কীভাবে একটি আবাসনের ফ্ল্যাটের ভিতর এমন মৃত্যু ঘটল, তা নিয়েই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এখন নজর ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকেই। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই দক্ষিণ-পশ্চিম কলকাতার বেহালার পর্ণশ্রী থানার অন্তর্গত পারুই পাকা রোড এলাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধার জ্বলন্ত দেহ। নিজের বাড়ির ব্যালকনিতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই বয়স্ক মহিলার দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মৃতার নাম সর্বাণী পাল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল প্রায় ৭টা ৩৫ মিনিট নাগাদ লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ফোন আসে যে, ২০/১, পারুই পাকা রোডের একটি বাড়িতে আগুনে পুড়ে গিয়েছেন এক মহিলা।
খবর পেয়ে পর্ণশ্রী থানার আধিকারিক এসআই দেবপ্রসাদ মণ্ডল-সহ পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ সর্বাণী দেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশকে মৃতার স্বামী মৃণাল কান্তি পাল জানান, তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির মূল দরজার তালা খুলে উপরে যান। কিন্তু প্রথম তলার ঘরে স্ত্রী সর্বাণী পাল ওরফে বীণাকে খুঁজে পাননি। এরপর কেরোসিনের গন্ধ পেয়ে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে যান এবং স্ত্রীর দগ্ধ ও নিস্তেজ দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি সবুজ রঙের কেরোসিন বোতল ও একটি গ্যাস লাইটার উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, শোওয়ার ঘরের টেবিল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল যে, দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, ব্লাড সুগার, সায়াটিকা ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন সর্বাণী দেবী। শারীরিক যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়ে তিনি নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নোটে তিনি উল্লেখ করেছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার ছেলে বর্তমানে বিদেশে কর্মরত। এখনও পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তদন্ত চলছে এবং দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।