জুড়ে গেল হাওড়া-সেক্টর ফাইভ, প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি...
আজকাল | ২৩ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার অবসান বৃষ্টি বিকেলে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, শুক্রবার বিকেলে উদ্বোধন করলেন কলকাতার বহু প্রতীক্ষিত তিন লাইনের মেট্রো। এই তিনটিই সম্প্রসারিত মেট্রো পথ শহরের। এক কথায়, পুজোর আগেই মেট্রোপথে জুড়ে গেল শহর।
প্রধানমন্ত্রী যে এই মেট্রো উদ্বোধনে শহরে আসবেন সেই জল্পনা ছিল আগে থেকেই। বৃহস্পতিবার মোদির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয় তা। শুক্র সকালে তিনি প্রথমে বিহারে যান। সেখানে বক্তব্য রেখে আসেন বঙ্গে। উদ্বোধন করলেন সম্প্রসারিত তিন মেট্রো লাইন।
এদিন নোয়াপাড়া থেকে জয়হিন্দ পর্যন্ত নবনির্মিত ইয়লো লাইন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে বেলিয়াঘাটা পর্যন্ত অরেঞ্জ লাইন এবং গ্রিন লাইন- ১ ও ২ অর্থাৎ শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত আন্তঃসংযুক্ত মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন করলেন তিনি।
সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধে থেকেই সাধারণ মানুষ চড়তে পারবেন নয়া লাইনের মেট্রোয়। ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড, দীর্ঘ অপেক্ষার শেষে খুলে যাওয়া সম্প্রসারিত পথে চলেছে মেট্রোর রেক। প্রথম যাতায়াত সফল। এই প্রায় তিন কিলোমিটার পথ মেট্রোয় সময় লেগেছে প্রায় চার মিনিট।
২০২৪ সালেই সূচনা হয়ে গিয়েছে গঙ্গার তলায় মেট্রো চলাচল। অন্যদিকে মেট্রো ছুটছে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। তাতে বহু মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে। তবে বউবাজার অংশে নানা সমস্যার কারণে দীর্ঘকাল থমকে ছিল ওই অংশের কাজ। তবে এবার শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড লাইনের উদ্বোধন হয়ে যাওয়ায়, হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রোতেই যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা। তাতে সময় বাঁচবে বহু। নিত্যযাত্রীদের যাতায়াতে আর একাধিকবার পরিবহন বদল করতে হবে না। এক মেট্রোতেই শহরের এক প্রান্ত থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে অন্য প্রান্তে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেট্রো লাইন উদ্বোধনের আগেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। লিখেছেন, '
আজ একটু স্মৃতি-তাড়িত হতে দিন। ভারতের রেলমন্ত্রী হিসেবে কলকাতায় অনেকগুলি মেট্রো রেল করিডরের পরিকল্পনা করা ও অনুমোদন দেবার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই যে, এই শহরের বিভিন্ন প্রান্তকে (যেমন - জোকা, বেহালা, তারাতলা, গড়িয়া, নোয়াপাড়া, দক্ষিণেশ্বর, বিমানবন্দর, দমদম, সেক্টর ফাইভ, ইত্যাদি) একটি মহানাগরিক মেট্রো গ্রিড-এ সংযুক্ত করার জন্য যাবতীয় কাজ - তার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা, প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করা, সময়ে কাজ শুরু করা – সব কিছুই করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। টালিগঞ্জ–গড়িয়া, দমদম–গড়িয়া, দক্ষিণেশ্বর–দমদম, সল্টলেক–হাওড়া - এই সব সংযোগেরই সূচনা আমার হাত দিয়ে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলপথের রুটও বাস্তবসম্মতভাবে পরিবর্তন করে তার রূপায়ণের পথ আমি প্রশস্ত করি। এই সব কাজের জন্য মেট্রো রেলওয়ের একটি পৃথক জোনও আমি কলকাতায় করি। সারা ভারতে ২০টি জোন ছিল, এটি অধিকন্তু নূতন হয়। ওয়ার্ল্ড ক্লাস স্টেশন তৈরীর ঘোষণাও ছিল আমার। এটা আমার গর্ব, পরে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। রাজ্যের তরফ থেকে বিনামূল্যে জমি দেওয়া, রাস্তা তৈরি করে দেওয়া, বাস্তুচ্যুত মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা সহ যাবতীয় বাধা-বিঘ্ন সরিয়ে যাতে দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন হতে পারে তার বন্দোবস্ত আমরাই করেছিলাম। রাজ্যের মুখ্যসচিবরা ধারাবাহিকভাবে একাধিক কোঅর্ডিনেশন মিটিং করেছেন যাতে নির্বাহী বিভিন্ন এজেন্সির মধ্যে সমন্বয় বজায় থাকে, কাজে সুবিধা হয়। এককথায়, রেলমন্ত্রী হিসেবে যে পরিকল্পনাগুলো করেছিলাম, সেগুলো ফিল্ডে যাতে সঠিকভাবে শেষ হয় তার ব্যবস্থাও আমরাই করেছিলাম- এই সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
মেট্রো পরিকাঠামো সম্প্রসারণ আমার একটি দীর্ঘ সফরের অন্যতম অংশ। আজ আমাকে কিছুটা নস্টালজিক হতে দিন।'ম