• আন্দোলনের আড়ালে বড়সড় দুর্নীতি! জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক-ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার প্রতিবাদে একসময় গর্জে উঠেছিল গোটা রাজ্য, এমনকি দেশের নানা প্রান্ত থেকেও উঠেছিল সমবেদনার সুর। তৈরি হয়েছিল ‘জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’, শুরু হয়েছিল গণআন্দোলন। তবে এবার সেই আন্দোলনের মধ্যেই উঠল বিস্ফোরক দুর্নীতির অভিযোগ। সরব হয়েছে ‘ন্যায়বিচার মঞ্চ’ তথা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চ।

    মঞ্চের সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘চিকিৎসক ছাত্রীর নির্মম হত্যাকাণ্ড মানবতার লজ্জা। কিন্তু আরও লজ্জাজনক, সেই মৃত্যুকে পুঁজি করে আন্দোলনের নামে কোটি কোটি টাকার তোলাবাজি হয়েছে। আন্দোলন, আদতে রূপ নিয়েছে এক বড়সড় অর্থনৈতিক খেলায়।’ চন্দ্রচূড়ের দাবি অনুযায়ী, জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট প্রায় ৪ কোটি টাকা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তুলেছিল। অথচ তার মধ্যে মাত্র দেড় কোটি টাকার হিসেবপত্র বা খরচের বিল মেলে। বাকি প্রায় আড়াই কোটি টাকা কোথায় গেল, সে প্রশ্নের উত্তর নেই।

    শুধু তাই নয়, শিল্পী অসিত সাই বিনামূল্যে যে ‘অভয়া’ মূর্তি তৈরি করেছিলেন, সেটির জন্যও নাকি ভুয়ো বিল তৈরি হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যেভাবে পাড়ার গুণ্ডারা অনুষ্ঠান-উৎসবের নামে চাঁদা তুলে টাকার অপব্যবহার করে, এখানেও তাই হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ডিউটি না করে বিক্ষোভ দেখিয়ে, আবার প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে রোজগার চালিয়ে গিয়েছেন কিছু জুনিয়র ডাক্তার। যার ফল ভুগেছেন সাধারণ রোগীরা, চিকিৎসা না পেয়ে মারা গিয়েছেন বহু গরিব মানুষ।’

    এই বিষয়ে ‘ন্যায়বিচার মঞ্চ’-এর অন্য সদস্য অনামিকা মণ্ডল ও স্বপন দাস জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নিতে প্রস্তুত তাঁরা।

    এই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তাঁদের পক্ষ থেকে কী জবাব আসে, সেদিকেই এখন নজর গোটা রাজ্যের। আন্দোলনের আবেগকে কেন্দ্র করে যদি সত্যিই আর্থিক দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে তা ভবিষ্যতের ছাত্র আন্দোলনগুলিকেও বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে বলে মনে করছেন রাজ্যের বিশিষ্ট মহল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)