‘এসআইআর-র নামে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না’, প্রতিবাদে সোচ্চার অমর্ত্য সেন
প্রতিদিন | ২৩ আগস্ট ২০২৫
ফারুক আলম: জাতীয় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে জোর রাজনৈতিক তরজা চলছে দেশজুড়ে। সেই প্রেক্ষাপটে এবার এসআইআর নিয়ে মুখ খুললেন বাংলার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। শুক্রবার সল্টলেকের আই বি ব্লকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অর্মত্য সেন বলেন, “এসআইআর-র নামে ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে কোনও আলোচনা চলতে পারে না। তবে এটা মানতে হবে, দেশে বহু নাগরিকের ডকুমেন্ট নেই। তাই বলে তাঁদের ভোটার হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।” অর্থনীতিবিদের মতে, “কিছুটা ভালো করার অজুহাতে বড় রকম ক্ষতি করা উচিত নয়।” পাশাপাশি বর্তমান দেশে বাঙালি ও বাংলা ভাষা ‘অসহিষ্ণুতা’ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। ভাষাগত ‘বিভাজন’ নিয়ে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “বাংলায় কথা বললে, নাকি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমি ফরাসি জানি না।তাহলে হয়তো, আমাকে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হত। এটা আমাকে কিছুটা চিন্তিত করে তুলছে।” এই প্রসঙ্গেই সংবাদমাধ্যমের সামনে মজার ছলে অমর্ত্য সেন বলছেন, “আমাকে বাংলাদেশে পাঠালে, আমার কোনও আপত্তি নেই। কারণ, ঢাকাতে আমার বাড়ি ছিল। সেখানেই পরিবারের শিকড় রয়েছে।”
এদিন প্রতীচী ট্রাস্টের উদ্যোগে সল্টলেকে অমর্ত্য সেন রিসার্চ সেন্টার ভবনে ‘ভারতের যুব সমাজ, তাদের যে সামাজিক সুযোগ থাকা উচিত’ শীর্ষক একটি আলোচনা চক্র আয়োজিত হয়। পাশাপাশি ওই মঞ্চেই নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের অধ্যাপক দাদু ক্ষিতিমোহন সেন-র লেখা ‘ভারতে হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত সাধনা’ বইটি পুনঃমুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। সেই কর্মসূচি থেকে বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে উপস্থিত পড়ুয়াদের থেকে আসা প্রশ্নে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, মানুষের যে কোনও জয়াগায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে। সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। বাঙালি, পাঞ্জাবি, তামিলনাড়ু এ সব লালন করলে চলবে না। হিন্দু-মুসলমান বিভেদ তৈরি করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন, তার প্রতিবাদ হওয়া উচিত।