• রাম নয়, এবারও মোদির মুখে ‘জয় কালী’
    প্রতিদিন | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জুলাই মাসে দুর্গাপুরের সভা থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বঙ্গীয়করণে সিলমোহর দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। একেবারে খাঁটি বাংলা ভাষায় বক্তব্য রেখেছিলেন। দমদমের সভাতেও তার অন্যথা হল না। এবারও কালীচরণে প্রণাম করেই বক্তব্য শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তাঁর মুখে শোনা গেল দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, করুণাময়ী কালী মন্দিরের নামও। তবে এদিন তাৎপর্যপূর্ণভাবে মোদীর বক্তব্যে উঠে আসে ভক্ত হনুমানের নামও। আর সেখানেই রাজনৈতিকমহলের প্রশ্ন, একদিকে বাঙালি আবেগ অন্যদিকে হিন্দিভাষী ভোটারদের বার্তা দিতেই কি মোদির বক্তব্যে উঠে এল ভক্ত হনুমানের কথা?

    রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বাঙালি আবেগে শান দিতেই এদিন মোদির মুখে শোনা গেল কালি নাম। অন্যদিকে এদিন ‘রাম -নাম’ না শোনা গেলেও মোদীর বক্তব্যে উঠে এসেছে ভক্ত হনুমানের কথা। সভায় মোদি দমদম হনুমান মন্দিরেও প্রণাম জানান। অনেকের মতে, দমদম-সহ রাজ্যে একটা বড় হিন্দিভাষী ভোটব্যাঙ্ক আছে।  অনেকেরই আরাধ্য হনুমান। সেই সমস্ত ভোটারদের মন পেতেই এদিন মা কালির সঙ্গে মোদির মুখে হনুমান স্তুতিও শোনা গেল? অনেকে আবার মনে করছেন, শহরাঞ্চলে রামনামের উগ্র হিন্দুত্ব তেমন কলকে পাচ্ছে না। ফলে দুর্গা-কালি-হনুমানের মিশেলে ‘আর্বান’ হিন্দুদের ভোট বাক্সে টানার চেষ্টা করেছেন নমো।   

    গত সাড়ে তিনমাসের মধ্যে এই নিয়ে তিনবার বাংলায় এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একগুচ্ছ মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি দমদম সেন্ট্রাল জেল ময়দানে সভা করেন তিনি। আর সেই সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে শাসকদলকে আক্রমণ শানান। তবে এদিন বক্তব্যের শুরুতেই নিয়ম মেনেই একেবারে বাংলা ভাষায় মোদি বলেন, বড়রা প্রণাম নেবেন আমার, ছোটরা ভালোবাসা। পাশাপাশি দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, করুণাময়ী কালী মন্দিরের নাম করেই প্রণাম জানান। এর সঙ্গেই বাংলা এবং বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গও টানেন।

    মোদি বলেন,”এমন সময় আমি কলকাতায় এলাম যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি চলছ। প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে কুমোরটুলিতে। এর সঙ্গে যখন উন্নয়ন জুড়ে যায়, খুশি দ্বিগুণ হয়ে যায়”। বলে রাখা প্রয়োজন, প্রতিবারই রাজ্যে এসে বক্তব্যের শুরুতে বাংলাতে কথা বলতেই চেষ্টা করেন। এবারও সেই ধারা অব্যাহত রেখেই ভাঙা ভাঙা বাংলাতে দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট সহ একাধিক মন্দিরের নাম নিলেন। দুর্গাপুজোর আবেগকেও সুকৌশলে তুলে ধরলেন। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে তৃণমূল যখন বাঙালি অস্মিতা নিয়ে সরব, সেই ইস্যুতে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, তখন মোদির এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি শ্রমিকরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

    যা নিয়ে সংসদেও বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদরা। বিজেপি যে ‘বাংলা বিদ্বেষী’ তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে দাঁড়িয়ে এদিন কৌশিকী আমাবস্যায় কালীর চরণে প্রণাম জানিয়ে মোদি যেভাবে বক্তব্য শুরু করলেন তা রাজনৈতিকভাবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)