কোচবিহার গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলে ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ
বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহার গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লেডিস হস্টেলের তিনতলার একটি ঘরে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আবাসিক পড়ুয়ারা উদ্ধার করে স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখান থেকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
কলেজ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম অন্বেষা ঘোষ (২০)। তিনি দুর্গাপুরের বাসিন্দা ছিলেন। পুলিস শুক্রবার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য এমজেএন মেডিক্যালে পাঠায়। গভীর রাতেই কলেজ থেকে মৃতার পরিবারকে ঘটনাটি জানানো হয়। দুর্গাপুর থেকে মৃতার বাবা-মা ও মামা রওনা দিয়েছেন। ছাত্রীর পরিবারের দাবি, মেয়ে কিছুদিন হল প্যানিক করছিল।
১৯ আগস্ট পরিবারের সদস্যরা তাঁকে এখানে রেখে দুর্গাপুরে ফিরে যান। তারপর থেকেই ছাত্রী হস্টেল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন। তাঁর বাবা আশ্বাসও দিয়েছিলেন দিন কয়েক পর নিয়ে যাবেন। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনায় শোকে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি।
ছাত্রীর বাবা তাপসকুমার ঘোষ টেলিফোনে বলেন, ১৯ আগস্ট মেয়েকে হস্টেলে রেখে এসেছিলাম। গত মে মাসে কলেজের ফেস্টের দিন ওর প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল। কোচবিহারে ওকে ডাক্তার দেখানো ও কাউন্সেলিং করানো হয়। ১৯ তারিখ ওকে রেখে আসার পর থেকেই বলছিল ওখানে ওর ভালো লাগছে না। নিয়ে যেতে বলেছিল। কয়েক দিন পর নিয়ে আসব বলেছিলাম। তার মাঝেই দুঃসংবাদ।
কলেজের প্রিন্সিপাল সুশোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাত ২টো ২০ নাগাদ আমাদের কাছে খবর আসে। অন্বেষাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অন্য ছাত্রীরা জানান। পরে জানতে পারি এমন ঘটনা। মেয়েটির কলেজে উপস্থিতি ভালো ছিল।
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা জানিয়েছেন, কোচবিহার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কোতোয়ালি থানার পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেও অন্বেষার বাবা মেয়েকে ভিডিও কল করে সমস্ত ওষুধ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। রাত ১২টা ১৭ মিনিটে মায়ের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন অন্বেষা। এদিকে, কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত প্রায় একটার সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন হস্টেলের ছাত্রীরা। এরপরেই হস্টেলের ঘর থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিজস্ব চিত্র