• ফের বিয়ের সানাই বাজল মূক ও বধিরদের হোম রায়গঞ্জের সূর্যোদয়ে
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: সপ্তাহ দু’য়েকের ব্যবধানে ফের বিয়ের সানাই বাজল রাজ্যের একমাত্র মূক ও বধিরদের হোম রায়গঞ্জের সূর্যোদয়ে। এবার বিয়ে হল হোমের সদ্য প্রাক্তন আবাসিক অনাথ কন্যা কাজল কুমারীর। হিন্দু রীতিনীতি মেনে কাজলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন রায়গঞ্জ শহরের ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা মিঠুন সরকার। দু’সপ্তাহ আগে ক্যানিং পান্থ এবং চন্দ্রকলি পান্থ নামে দুই আবাসিকের বিয়ে হয় সূর্যোদয় হোমেই।

    কিছুদিন আগে হোমে একটি নাচের অনুষ্ঠানে কাজলের সঙ্গে প্রথমবার মিঠুনের চোখাচোখি। দু’তরফে কোনও শব্দচ্চারণ না হলেও সেই থেকে ভালো লাগার শুরু। ক্রমে প্রেম। শেষপর্যন্ত মিঠুনের পরিবারের সদস্য এবং সূর্যোদয় হোম কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে শুক্রবার বিকেলে মোটর কালীবাড়িতে কাজলের বিয়ে সম্পন্ন হল। সনাতনী প্রথা মেনে আর পাঁচটা বিয়ের অনুষ্ঠানের মতোই আইবুড়ো ভাত থেকে অধিবাস, গায়ে হলুদ। আড়ম্বরের সঙ্গে মন্দিরে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তাঁদের চার হাত এক হয়। এই বিয়ে উপলক্ষ্যে ২৫ আগস্ট প্রীতিভোজের আয়োজন রয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরপক্ষ, কনেপক্ষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও কর্মীরা। ছিলেন মিঠুনের পরিবারের সদস্যরা এবং সূর্যোদয় হোমের প্রিন্সিপাল পার্থসারথি দাস। 

    গত কয়েক দিন ধরেই রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার এই হোমে কাজল ও মিঠুনের বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়। সূর্যোদয় হোমের প্রিন্সিপাল পার্থসারথী দাসের বক্তব্য,  বিয়ের রীতি মেনে শুক্রবার হোমেই গায়ে হলুদের আয়োজন করি। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। শেষে বিউটিশিয়ানের কাছে সাজগোজ সেরে এদিন বিকেলে মোটর কালীবাড়িতে সমস্ত রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন হয়। হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে উত্তর দিনাজপুর জেলার শেরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার হয়ে সূর্যোদয়ে আসেন কাজল। সেই থেকে হোমে ছিলেন। সম্প্রতি আত্মনির্ভর হতে কর্ণজোড়ায় একটি হোটেলে রান্নার কাজ শিখছিলেন কাজল। সেই হোটেলের মালিক নিয়তি সরকারের বাড়িতেই থাকতেন কাজল। অন্যদিকে, মিঠুন হোমের আবাসিক নন। তিনি রায়গঞ্জ শহরের ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা। তাঁর বাসনপত্রের দোকান আছে। বিয়ের পর মিঠুনের সঙ্গে কাজল ইন্দিরা কলোনিতে শ্বশুরবাড়িতে থাকবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)