পশ্চিম মেদিনীপুরে লাগাতার বৃষ্টি, সতর্ক থাকার বার্তা জেলা প্রশাসনের
বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: জেলাজুড়ে লাগাতার বৃষ্টি স্থানীয়দের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কারণ ধীরগতিতে হলেও নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। সেই কথা মাথায় রেখে ফের অ্যাক্টিভ করা হল কন্ট্রোল রুম। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বিশেষ বৈঠকও করলেন। সেই বৈঠক থেকে সকলকে সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, একটানা বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। তাই শুক্রবার কেশপুর ব্লকে শস্যবিমা নিয়ে বিশেষ বৈঠক হয়। চাষের ক্ষয়ক্ষতি হলেও যাতে একজন মানুষও এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, বৈঠক থেকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে।প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, প্রত্যেক বিডিওকে এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নদী বাঁধের সমস্যা থাকলে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বৃষ্টি বাড়ায় বৈঠক হয়েছে। সকলকেই সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কন্ট্রোল রুমেও ফোন করে মানুষ সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক বলেন, কেশপুর ব্লকে শস্যবিমা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। এবছর যদি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়, তবে একজন চাষিও যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে এক বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ জুন থেকে লাগাতার বৃষ্টি শুরু হয়। সমস্যায় পড়েন গড়বেতা-১ ও গড়বেতা-২ ব্লকের মানুষ। তবে সেই এলাকা থেকে জল তাড়াতাড়ি নেমে গেলেও ঘাটাল মহকুমার একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। জুন মাসের শেষের দিকে দিন কয়েক বৃষ্টি না হওয়ায় জল নামতে শুরু করেছিল ঠিকই, কিন্তু ফের প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। জলমগ্ন হয়ে যায় ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরবর্তী সময়ে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জেলায় এনিয়ে প্রায় চারবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল। একইসঙ্গে বৃষ্টি বেশি হওয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতিমধ্যেই জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশো’ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। কেশপুর ব্লকের বাসিন্দা সঞ্জয় দাস বলেন, গত বছর কেশপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছিল। যদিও প্রশাসনের তৎপরতায় এবছর বিশেষ কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু ফের একটানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আমরা ঘরপোড়া গোরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরাই। বৃষ্টি শুরু হলেই ভয় হচ্ছে।