• যন্ত্রণার যাত্রাপথ: পুজোর আগে কি হাল ফিরবে রাস্তার? প্রশ্ন শহরবাসীর
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • গণেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় , বর্ধমান: বর্ধমান শহরের বেশিরভাগ রাস্তা কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কার্যত ভালো রাস্তা খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। অধিকাংশ রাস্তা দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। তার উপর টানা বর্ষণে রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে ছোটবড় গর্ত। তাতে বর্ষার জল জমে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তার উপর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে রয়েছে। সেখান দিয়ে হেঁটে চলাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে প্রায়শই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। মাসখানেকের মধ্যে পুজো। তার আগে রাস্তার হাল ফিরবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত শহরবাসী। পুরসভার অবশ্য দাবি করেছে, পুজোর আগেই রাস্তার হাল ফেরানো হবে। তার জন্য টাকাও রয়েছে।

    শহরের বেহাল রাস্তাগুলির মধ্যে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধনপুর রোডের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। একই অবস্থা খালাসিপাড়ার রাস্তাটিরও। গোলঘরের ঢালাই রাস্তার অবস্থাও খারাপ। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলুডাঙার রাস্তাটিও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়েছে। দুবরাজদিঘি হরেরডাঙা রাস্তাটির অবস্থাও খুব খারাপ। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়ার ঢালাই রাস্তাটির অবস্থাও খুব খারাপ। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে খালাসিপাড়ায় মসজিদতলা গলির রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে আছে। এনিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কালনা রোডের অবস্থাও খারাপ। গুডস শেড রোড প্রথম গলির অবস্থাও তথইবচ। পুরসভার চেয়ারম্যানের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। শিয়ালডাঙা মোড় থেকে ইছলাবাদ ইয়ুথ ক্লাব হয়ে কিরণ সঙ্ঘের রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। বিধানপল্লি হয়ে কালনা গেট বাঁকার ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। 

    শহরের কালীবাজার থেকে ইছলাবাদ যাওয়ার রাস্তাটির অবস্থাও বেহাল। ইছলাবাদ থেকে বীরহাটা যাওয়ার রাস্তাটিও দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বড়নীলপুর কয়েকটি রাস্তার অবস্থাও খারাপ। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। রাস্তায় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। কানাইনাটশাল ডিভিসি রোডের অবস্থা খুবই খারাপ। ওই রাস্তা যেন চাঁদের মাটিতে পরিণত হয়েছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার অবস্থা এমনিতেই খারাপ ছিল। কিন্তু, নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় তা চরম আকার নিয়েছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সামান্য বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে পড়ে। রাস্তার গর্তে পড়ে হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে।

    শহরের এক টোটো চালক বলেন, রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। গর্তের উপর দিয়ে যাতায়াতের ফলে টোটোর হাইড্রোলিক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া ধীরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাতে অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, রাস্তার এমন বেহাল অবস্থা আগে কখনও দেখিনি। রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকায় পিচরাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া নিকাশি ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেন উপচে জল রাস্তায় চলে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে জল জমে থাকছে। তার থেকে রাস্তার প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, পুজোর আগেই বেশিরভাগ রাস্তার সংস্কার করা হবে। এনিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। (শেষ)
  • Link to this news (বর্তমান)