নদীয়ায় ১৫ দিনে ‘আমাদের পাড়া’য় জমা ১৭ হাজার প্রকল্প
বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলায় আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত জমা পড়েছে ১৭ হাজার প্রকল্প। এর মধ্যে নতুন রাস্তা নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কারের প্রকল্প সবচেয়ে বেশি। কর্মসূচি শুরুর মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই এত বেশি প্রকল্প সাধারণ মানুষের থেকে উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, জেলাজুড়ে প্রায় ৬০০টি শিবিরে এসেছেন ৫ লক্ষ ১৮ হাজার মানুষ। কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখে খুশি প্রশাসনের আধিকারিকরাও। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানালেন নদীয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ।
তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ শিবিরে এসে তাঁদের এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা আমাদের কাছে তুলে ধরছেন। আমরা সেই সমস্ত দাবিদাওয়া লিপিবদ্ধ করছি। এলাকার বাসিন্দারাও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে আমাদের জানাচ্ছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় মোট ৪৬৮৬টি বুথ রয়েছে। যেখানে মোট ১৭৮৪টি শিবির করার পরিকল্পনা রয়েছে। গত ২ আগস্ট থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। বিগত ১৫ দিনে জেলাজুড়ে মোট ৫৮৯টি শিবির আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে ১৫৫৩টি বুথের ৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৪০ মানুষ শিবিরে এসেছেন।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট ১৭ হাজার ৩৩টি প্রকল্প জমা পড়েছে। যার মধ্যে কৃষ্ণনগর সদর মহকুমায় ৬৫২৩টি, তেহট্ট মহকুমা ২৯৮৯টি, রানাঘাট মহকুমায় ৪১৩২টি এবং কল্যাণী মহকুমায় ৩৩৮৯টি প্রকল্পের জমা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলা জুড়ে এখনো পর্যন্ত ১৬৯৯০টি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে। যার মধ্যে ১০,৮৩৮টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে স্ক্রুটিনির কাজ শেষ হয়েছে। প্রতি বুথ থেকে গড়ে ১১টি করে প্রকল্প জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে।
প্রকল্পের ধরণ বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ৫৬০৮টি প্রকল্প রাস্তা সংক্রান্ত, ৫৩২৫টি প্রকল্প বিদ্যুৎ সংক্রান্ত, ২৩১৩টি প্রকল্প শৌচাগার সংক্রান্ত, ৯৯৬টি স্কুল সংক্রান্ত সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনায় শুরু হয়েছে অভিনব উদ্যোগ ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। গত ২ আগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হওয়া এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য— এলাকার উন্নয়নের অগ্রাধিকার ঠিক করবেন সেখানকার মানুষজনই।
গ্রামের সাধারণ মানুষ মুখোমুখি আলোচনায় জানাবেন কোন কাজটি তাঁদের কাছে সবচেয়ে জরুরি। সেই মতামতের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে প্রকল্প। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বও তুলে দেওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনের হাতে।