সংবাদদাতা, বোলপুর: রাতভর টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত নানুর। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নানুর, সাকুলিপুর, উচকরণ ও কীর্ণাহার থানার একাধিক গ্রাম। শতাধিক দোকানঘরে জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে ব্যবসার সামগ্রী। ভেঙে পড়েছে প্রায় ৮০টিরও বেশি কাঁচাবাড়ি। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) বিশ্বজিৎ মোদক, নানুরের বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাজি, বোলপুর মহকুমা শাসক অয়ন নাথ, নানুরের বিডিও সন্দীপ সিংহ রায় সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। তাঁরা নানুর বাজার এলাকা ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ঘুরে দেখেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জেলাশাসক কথা বলেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রাক বর্ষা থেকেই নানারকম বর্জ্য পদার্থ নালায় জমে থাকলেও পরিষ্কারের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার ফলেই এবারের অতিবৃষ্টিতে এলাকায় জল জমে প্রবল দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী ও ত্রিপল বিলি শুরু করেছে। শুক্রবার প্রশাসন সক্রিয়তার বার্তা দিলেও ভবিষ্যতে যাতে একই দুরবস্থা না হয়, তার জন্য প্রশাসনকে আগেভাগেই নালা সংস্কার ও নিকাশি ব্যবস্থা ঠিকঠাক করতে হবে।
এদিন পরিদর্শনের পর জেলাশাসক বলেন, অতি ভারী বৃষ্টির কারণে জল জনপদে ঢুকে গিয়েছে। এরফলে ৮০টির মতো কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলি আমরা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই বাংলার বাড়ি প্রকল্পের তালিকায় নাম রয়েছে। এছাড়া যাঁদের নাম তালিকায় লিপিবদ্ধ নেই, তাঁদের অতি বর্ষণজনিত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম রাখার জন্য সরকার থেকে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের সম্পূর্ণ কাঁচা বাড়ি, তাঁদের কয়েকদিনের মধ্যেই সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণের টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া এই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বিষয়টিও বিধায়কের সঙ্গে ঘুরে দেখেছি। যেখানে যেখানে সমস্যা রয়েছে, সমাধান করা হবে। দুয়ারে রেশন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্কুল যাতে চালু থাকে তার জন্য ব্লক প্রশাসনকে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।