নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বারবার জলমগ্ন হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছে ধান চাষ। ফের নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে প্লাবনের শঙ্কা রয়েছে। তাই খরিফ মরশুমে চাষিদের বাংলা শস্যবিমার আওতায় আনতে জোর দিচ্ছে কৃষিদপ্তর। প্রত্যেক পঞ্চায়েত পিছু শিবির করে শস্যবিমার ফর্ম পূরণ করানো শুরু হয়েছে। এমনকী, আরও তৃণমূলস্তরে শিবির করানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুক্রবারও তা চলেছে। ফলে নিচু এলাকাগুলিতে জল জমতে শুরু করছে। তাই পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এদিনই হুগলি জেলা কৃষিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মর্দন্যা সহ অন্যান্য অধিকারিকরা খানাকুলের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা চাষিদের সঙ্গেও কথা বলেন। এমনকী, মারোখানা পঞ্চায়েতের বিমার শিবিরেও যান। ডেপুটি ডিরেক্টর বলেন, বাংলা শস্যবিমার কাজ জোরকদমে চলছে। শিবিরের আগে চাষিদের খবর জানাতে মাইকিং করানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা শস্য বিমায় চাষিদের হয়ে প্রিমিয়াম দিয়ে দিচ্ছেন। বিগত দিনে বন্যা কবলিত এলাকার চাষিরা ফসলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য বিমার টাকাও পেয়েছেন। এবারও বন্যার ভ্রুকুটি এখনও রয়েছে। তাই চাষিদের বিমার আওতায় আনতে কৃষিদপ্তর কাজ করছে। চাষিরাও যাতে নির্দিষ্ট শিবিরে গিয়ে বিমার ফর্ম পূরণ করেন, তার আহ্বান করছি।
খানাকুলের পশ্চিম ঘোষপুরের চাষি অজিত মাইতি বলেন, এই বছর কয়েক দফায় বীজ রোপণ করতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এখনও মাঠে জল জমে রয়েছে। ফলে ধানের ফলন এবার না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে আরামবাগ মহকুমায় আমন ধান ৬২৯৭০হেক্টর জমিতে রোপণ করা হয়েছে। আউশ ধান হয়েছে প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষিদপ্তরের দাবি, গত বছরও এই পরিমাণ জমিতে ধান রোপণ হয়েছিল। কিন্তু, এবার অনেক জায়গায় ধানের বীজ ও চারা নষ্ট হয়েছে। সেই সব এলাকায় কৃষিদপ্তর পরে বীজ ও ধানের চারা বিলিও করেছে। তবে খানাকুলের কিছু নিচু এলাকায় জল থাকায় চারা রোপণ করাই সম্ভব হয়নি। সেই জন্যই এবারও বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কৃষিদপ্তর শস্য বিমার উপরে জোর দিয়েছে।
খানাকুল-২ ব্লকে এখনও পর্যন্ত সাতটি পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির হয়েছে। সেখানে প্রায় ১৫ হাজার আবেদন এসেছে বলে দাবি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে দ্বিতীয়বারের জন্যও শিবির করবে কৃষিদপ্তর। তারসঙ্গে বিডিও অফিসেও আবেদনের সুযোগ রয়েছে।