• মেট্রো উদ্বোধনে এসে পরিবর্তনের ডাক
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর ও কলকাতা: ‘পরিবর্তন চাই!’ ৩৪ বছরের ‘জগদ্দল’ বাম শাসনের উৎখাতে এই স্লোগানই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতিয়ার। ১৪ বছর পর সেই একই স্লোগান এবার প্রধানমন্ত্রীর গলায়। আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই শুক্রবার কলকাতায় তিনটি মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধনে এসে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন নরেন্দ্র মোদি। হিন্দি নয়, বাংলাতেই দিলেন স্লোগান, ‘তৃণমূল যাবে, পরিবর্তন হবে।’ এবার অবশ্য ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কথা বলেননি তিনি। বরং বলেছেন, ‘বাংলায় বিজেপির সরকার বানান। আমরা শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নের বাংলা বানিয়ে দেব। বিকশিত বাংলা, মোদীর গ্যারান্টি।’

    মেট্রো প্রকল্প উদ্বোধনে এসে মোদির এহেন ভোটের রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ, ‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ৫০টি আসনও পাবে না বিজেপি।’ প্রধানমন্ত্রীর সভা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তৃণমূল ভবন থেকেও দেওয়া হল হুঁশিয়ারি, ‘৩০টি বিধানসভা আসনে জিতলে বিরোধী দলনেতা পদ পাওয়া যায়, সেটাও পাবে না বিজেপি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক বিধায়ক নিয়ে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এটা বাংলার দেওয়ালে লেখা হয়ে গিয়েছে। বাংলায় যতবার মোদি-শাহরা আসবেন, তৃণমূলের আসন সেই অনুপাতে বাড়বে।’

    এদিন দু’-দু’টি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমটি সরকারি, মেট্রো উদ্বোধনের জন্য। দ্বিতীয়টি দমদমে দলীয় সভা। সেই সভা থেকেই দুর্নীতি থেকে অনুপ্রবেশ, মেয়েদের সুরক্ষা সব ইস্যুতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন মোদি। বলেছেন, তৃণমূলের জমানায় রাজ্যে জমি ও শিক্ষা দুর্নীতি, মা-বোনের উপর অত্যাচার ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে গিয়েছে। তৃণমূল সরকার যতদিন এই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবে ততদিন উন্নয়ন অবরুদ্ধ থাকবে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গত ১১ বছরে ইউপিএ জমানার তুলনায় তিন গুণের বেশি টাকা দিয়েছে বাংলার উন্নয়নে। কিন্তু কেন্দ্রের বেশিরভাগ অর্থ লুট করা হচ্ছে। বাংলায় অনুপ্রবেশকারীরা রাজ্যের যুবকদের রোজগার কেড়ে নিচ্ছে বলেও সরব হন মোদি। বলেন, তৃণমূল ভোটব্যাঙ্কের জন‍্য অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। ভুয়ো কাগজ তৈরি করে যারা দেশে থাকছে, তাদের দেশ ছেড়ে যেতেই হবে। বিজেপিকে ভোট দিলেই অনুপ্রবেশকারীরা বাংলা ছেড়ে পালাবে।

    প্রধানমন্ত্রীর এহেন ভোট-রাজনীতির জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সন্ধ্যায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘বাংলায় সভা করতে এসে কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। কারণ, উনি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছেন, তখন দুর্নীতিগ্রস্তরা ওঁর মঞ্চ আলো করে বসে। ক্ষমতা থাকলে ওই দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নিন নরেন্দ্র মোদি’। মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি এটা বুঝিয়ে গেলেন বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে পড়লেই সাত খুন মাফ। সেই কারণে মোদির মঞ্চে বক্তব্য রেখেছেন তৃণমূল মহিলা সাংসদদের হেনস্তাকারী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনীত সিং বিট্টু।’ ছবি: অতূণ বন্দ্যোপাধ্যায় 
  • Link to this news (বর্তমান)