• ক্ষুব্ধ বাঙালির মন জয়ে বাংলা ভাষার গুণগান প্রধানমন্ত্রীর!
    বর্তমান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দেশ জুড়ে বাংলাভাষী মানুষের উপর অত্যাচার ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই কোনও না কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি পীড়নের খবর প্রকাশ্যে আসছে। বাঙালিকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত। সেই আবর্তে গেরুয়া শিবিরের মুখপাত্র অমিত মালব্য  একধাপ এগিয়ে দম্ভের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন—বাংলা কোনও ভাষাই নয়। বছর ঘুরতেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। ভোট বড় বালাই! ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী নির্যাতনের এই আবহেই শুক্রবার দমদমে দলীয় জনসভা থেকে বাঙালির ক্ষোভে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা চালালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর কথায়, ‘আমাদের সৌভাগ্য, আমরা বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী  ভাষার তকমা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।’ মেট্রো রেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকাও বাঙালি হয়ে ওঠার ‘মরিয়া’ চেষ্টা চালিয়েছেন। অরেঞ্জ লাইন চালুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে গিয়ে রুবি মোড়ের স্টেশনটি যাঁর নামে নামাঙ্কিত হয়েছে, কালজয়ী সেই বাঙালি সংগীত শিল্পীর নাম বারবার ‘হিমন্তা’, ‘হিমন্তা’ (পড়ুন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়) বলে উচ্চারণ করে গেলেন সঞ্চালিকা। 

    শুধু ভাষার গুণগানই নয়, বক্তৃতা পর্বে বাঙালি মনীষীদের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী কয়েকবার বাংলায় কথা বলারও চেষ্টা করেছেন। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বাঙালিদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় রাজ্যবাসী ক্ষোভে ফুঁসছেন। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে এর প্রভাব যে ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই বিজেপি শাসিত রাজ্যে পরিকল্পিত ভাবে বাঙালির উপর অত্যাচার চললেও,  বাংলায় দাঁড়িয়ে বাঙালির মনজয় করতে এই চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।  

    এদিন প্রধানমন্ত্রী বাংলাতেই বক্তব্য শুরু করেন। বলেন, ‘বড়রা প্রণাম নেবেন। ছোটদের ভালোবাসা জানাই।’ এরপর কৌশিকী অমাবস্যার শুভকামনা জানিয়ে, কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দির এবং দমদমের হনুমানজি মন্দিরের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। কুমোরটুলিতে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি হচ্ছে বলেও জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলার মাটি, পুনর্জাগরণের মাটি। এই মাটিতে সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোষ্ঠ পালের মতো বহু গুণী মানুষ ও মহাত্মা জন্ম নিয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন সময় দেশকে ও সমাজকে নতুন চেতনা দিয়েছেন। এখান থেকেই অমরবানী জন্ম নিয়েছিল—জাগো, ওঠো, নবজীবনের গানে। নব আলোক জ্বালাও প্রাণে প্রাণে।’ রাজ্যে রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার বাড়তে থাকলেও, বাংলা আর বাঙালির প্রতি তাঁর সরকারের ‘দায়বদ্ধতার’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। বিজেপি সরকার বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করতে গর্বের সঙ্গে কাজ করছে। আমাদের সৌভাগ্য, সেই ভাষাকে শাস্ত্রীয় ভাষার তকমা দেওয়ার সুযোগ মেলায়।’ -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)