১৯০৮, অগস্টের শেষ দিন। কানাইলাল দত্ত ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু রাজসাক্ষী নরেন গোসাঁইকে হত্যা করেন সে-কালের আলিপুর জেল-এ। পরে তাঁদের ফাঁসির সাজা দেয় ব্রিটিশ সরকার। সে কালের জেল বা কারাগার, আজকের সংশোধনাগারগুলির সঙ্গে শুধু এ শহরের নয়, জড়িয়ে সারা দেশের ব্রিটিশ-বিরোধিতার, স্বাধীনতার ইতিহাস।
বড়বাজার ও লালবাজার থেকে কলকাতার দু’টি আদি কারাগার উনিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে উঠে আসে ময়দান অঞ্চলে। ১৮৬৪-তে মূল কারাগারটি ‘সেন্ট্রাল জেল’-এর মর্যাদা পায়, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কেন্দ্রে অবস্থানের সুবাদে তার নাম হয় প্রেসিডেন্সি জেল। তবে বিশ শতকের প্রথম দিকে মহারানি ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হয় তাকে। প্রেসিডেন্সি কারাগার স্থানান্তরিত হয় টালি নালার দক্ষিণ-পশ্চিমে, যেখানে ১৮১১ থেকেই কাজ করছিল চব্বিশ পরগনা জেলা কারাগার। ১৯০৬ সালে এর দক্ষিণে আর একটি কারাগার তৈরি করে নাম রাখা হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেল।
ঔপনিবেশিক আমলের কারাগারগুলির ইতিকথার সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি। সেলুলার জেলের বন্দিদের একটি হিসাব অন্তত মেলে, কিন্তু প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর ছাড়াও দুই বাংলা মিলিয়ে সে-কালের বন্দি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কোনও সরকারি বা অসরকারি পূর্ণাঙ্গ তালিকা কোথায়!
অরবিন্দ ঘোষ, বিপিনচন্দ্র পাল, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, পুলিনবিহারী দাস, উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, বীণা দাস-সহ বহু বিপ্লবীর স্মৃতিকথা এবং তাঁদের নিয়ে লেখা প্রামাণ্য বইয়ের সূত্র ধরে প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর কারাগারে বন্দি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকা তৈরিতে প্রয়াসী হয়েছেন শুভেন্দু মজুমদার, তাঁর অগ্নিযুগে কলকাতার জেলখানা (প্রকা: র্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন) বইয়ে। উঠে এসেছে বাঘা যতীন থেকে সূর্য সেন কিংবা প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ থেকে অতুল্য ঘোষের সঙ্গেও এই সংশোধনাগারগুলির সংযোগ-সম্পর্ক। সেলুলার জেলে কোনও মহিলা বন্দি ছিলেন না; অন্য দিকে কলকাতার কারাগারগুলিতে অন্তরিন থেকেছেন ননীবালা দেবী, দুকড়িবালা দেবী, সুহাসিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বহু মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী। সেলুলারে জেলের বন্দিরা সকলেই ছিলেন দণ্ডিত বা ‘কনভিক্ট’, কিন্তু কলকাতার এই দুই কারাগারে আটক ছিলেন বহু রাজবন্দি। সেলুলার জেল-এর থেকে প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর সংশোধনাগারের গুরুত্ব যে কিছু অংশে কম নয়, দেখিয়েছে বইটি।
শহরের কেন্দ্র থেকে অফিস-কার্যালয় দূরে সরিয়ে দেওয়ার সরকারি নীতি মেনে সংশোধনাগারও সরে গেছে দূরে। আলিপুরে হয়েছে মিউজ়িয়ম, রক্ষিত হয়েছে ও হচ্ছে কারান্তরালে স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি। এ কাজের যেন শেষ নেই, তা ত্রুটিহীন নিখুঁত করে তোলাও এক চ্যালেঞ্জ। যেমন, শহিদ মিনারে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিপ্লবী-তালিকায় নেই ১৯০৬-এ আলিপুর সেন্ট্রাল জেল স্থাপনার পর প্রথম ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চারুচন্দ্র বসুর নামের উল্লেখ— মনে করান লেখক। স্বাধীনতার মাসে ভারতের স্বাধীনতার বিশ্রুত ও বিস্মৃত রূপকারদের স্মরণে শহরবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানায় বইটি। ছবিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার, আশির দশকে তোলা আলোকচিত্র।
বিশ্বাস আর ব্রত
অগস্ট মাস ধরে আছে দেবব্রত বিশ্বাসের জন্ম ও মৃত্যুর স্মৃতিচিহ্ন। এই মাস যেমন স্বাধীনতার মাস, তেমনই বাঙালির প্রিয় ‘জর্জ বিশ্বাস’-এরও মাস। তাঁর স্মরণে ‘দেবব্রত বিশ্বাস বিশেষ সংখ্যা’ প্রকাশ করেছে বিচিত্রপত্র, শুরুতেই বিষ্ণু দে-র লেখা কবিতা দেবব্রতকে নিয়ে: “গায়কের দুই চোখ অন্তরঙ্গ, সমগ্র চেতনা শুধু গানে...” এর চেয়ে খাঁটি প্রারম্ভ আর কী-ই বা! তার পরেই শিল্পীর লেখা একগুচ্ছ চিঠি, চৌ এন লাই থেকে বঙ্গবন্ধু, হেমাঙ্গ বিশ্বাস থেকে গৌরী আইয়ুব যেগুলির প্রাপক— ইতিহাসের মণিমুক্তো যেন। “বিশ্বাস আর ব্রত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাস একদিন স্বরের জগতে প্রবেশ করেছিলেন,” শিল্পীর প্রয়াণের পর লিখেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ‘চিরকালীন দেবব্রত’ অংশে সমসময়ের অন্তরঙ্গ লেখ, আর ‘সমকালীন দেবব্রত’ অংশে এই সময়ের মূল্যায়ন-তর্পণ— ওজনদার করেছে পত্রিকাটিকে, করে তুলেছে সংগ্রহযোগ্যও। ছবি পত্রিকার প্রচ্ছদ থেকে, স্যমন্তক চট্টোপাধ্যায়ের রঙে-রেখায় দেবব্রত বিশ্বাস।
নৃত্য-ভাবনা
নৃত্য কি শুধুই এক শিল্পরূপ? ঔপনিবেশিকতা ও জাতীয়তাবাদের প্রভাবে নৃত্যের রূপ-রূপান্তর উন্মোচিত করে অর্থনৈতিক স্বার্থ, সাংস্কৃতিক ক্ষমতার লড়াইকেও। এই নিয়ে আলোচনা বড় একটা চোখে পড়ে না, এ বার সেই আয়োজনই যতীন দাস রোডের উইজ়ডম ট্রি কাফে-তে, ২৫ অগস্ট সন্ধে ৬টায়। ‘ভারতীয় নৃত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বর্তমান রাজনীতি’ নিয়ে বলবেন ব্রিটেনের এগজ়েটার ইউনিভার্সিটিতে নৃত্য-গবেষক প্রতীতি ঘোষ, সঞ্চালনায় শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈষম্য, পিতৃতন্ত্র, রাজনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাচও হতে পারে প্রতিরোধের ভাষা, সাংস্কৃতিক অর্থনীতির নতুন তত্ত্ব গঠনে দিশারি— শোনা যাবে তা।
নতুন এক
আর একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পেল কলকাতা: সেন্টার ফর রিসার্চ ইন পলিসি, কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোসাইটি (সিআরপিসিএস)। সমাজবিজ্ঞানের নানা ধারার সঙ্গে এখানে হবে হিউম্যানিটিজ়-এরও নানা দিক নিয়ে চর্চা। অছি পরিষদ থেকে কর্মসমিতি, সদস্যরা প্রায় সকলেই তরুণ, এরই মধ্যে আয়োজন করেছেন প্রভাত পট্টনায়কের বক্তৃতা-সহ একাধিক আলোচনা, অ্যাকাডেমিক প্রকাশনা নিয়ে কর্মশালা। কলকাতায় শুরু হয়েছে ডিজিটাল শ্রম নিয়ে প্রকল্প, চলচ্চিত্রকার বারীন সাহাকে নিয়ে বৈদ্যুতিন আর্কাইভ। গত ১০ অগস্ট উদ্বোধন হল ওয়েবসাইটের (www.crpcs.org), প্রাসঙ্গিক আলোচনা করলেন সুকান্ত চৌধুরী তপতী গুহঠাকুরতা অচিন চক্রবর্তী মৈনাক বিশ্বাস প্রমুখ। ২২-২৩ অগস্ট চলছে প্রতিবন্ধকতার আইনি ও নৈতিক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রেক্ষাগৃহে।
দুই রবি
রবীন্দ্রনাথের কাছে বর্ষা নব জীবনচেতনার প্রতীক। শান্তিনিকেতনে ‘বর্ষামঙ্গল’ উৎসব শুরু করেন, শিক্ষার্থীদের মনের বিকাশ, প্রকৃতির সঙ্গে যোগ, নান্দনিক চেতনা জাগাতে। নিউ টাউনের শিল্পবিপণি ‘কারু’ তাদের ‘কথারণ্য: স্টোরিজ় অব শান্তিনিকেতন’ অনুষ্ঠানমালার অঙ্গ হিসেবে আজ সন্ধ্যা ৬টায় রবীন্দ্রতীর্থ প্রেক্ষাগৃহে নিবেদন করছে ‘বর্ষামঙ্গল’, নবীন শিল্পীদের পরিবেশনায়। অন্য দিকে, ২৯ অগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় গ্যালারি চারুবাসনা-র উপেন্দ্রকিশোর সভাগৃহে ‘শ্রাবণী ঘোষ ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে, সঞ্জয় ঘোষের সঙ্কলন ও বিন্যাসে চিত্র-গীতি আলেখ্য ‘রবীন্দ্রনাথ: গানের মধ্যে ছবি’। থাকবেন যোগেন চৌধুরী পবিত্র সরকার রাজশ্রী ভট্টাচার্য প্রমুখ।
আঠারোয় পা
‘প্রাচ্য’ নাট্যদল গত ১৯ অগস্ট পা দিল আঠারোয়, জন্মদিনের অনুষ্ঠানের নাম ‘স্বপ্নে সত্যে মঞ্চক্ষেত্রে নাছোড় ১৮’। অ্যাকাডেমি মঞ্চে তিন দিন ব্যাপী উদ্যাপনের প্রথম দিন অরুণ মুখোপাধ্যায় ভূষিত হলেন ‘প্রাচ্য সম্মান’-এ, অভিনীত হল ক্যালিগুলা নাটকের নবপর্যায়ের দ্বিতীয় অভিনয়, পরদিন হল খেলাঘর-এর ৫০তম অভিনয়ও। রবিবার অ্যাকাডেমি মঞ্চে দুপুর ৩টেয় ‘শঙ্খমালা’ বাচিক গোষ্ঠীর শ্রুতি-দৃশ্যায়ন ‘যা রে কাগজের নৌকো’; সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রাচ্য-র নতুন প্রযোজনা, চন্দন সেন রচিত বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ:স্বপ্ন দেখার মহড়া-র প্রথম অভিনয়। নির্দেশক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আজ যে ভাবে দেশের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশবাসীর কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে, তার প্রতিরোধেই এই নাটক।”
বিরল সুযোগ
ফোটোগ্রাফির বিষয় হিসেবে কী না এসেছে— মানুষ, বন্যপ্রাণ, পথজীবন, নিসর্গ। নিসর্গের মধ্যে আবার হিমালয় আলোকচিত্রীদের মন কেড়েছে বার বার। উনিশ ও বিশ শতকের সন্ধিক্ষণে ইটালীয় আলোকচিত্রী ভিত্তোরিয়ো সেল্লা-কে আকৃষ্ট করে সিকিম হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির রূপ। ১৮৯৯-এ প্রথম পরিচয় হিমালয়ের সঙ্গে: কাঞ্চনজঙ্ঘা ও পরে কে-টু অভিযাত্রায় তুলেছেন অপূর্ব সব ছবি; বিষয় আঙ্গিক প্রযুক্তির নিরীক্ষায় মাউন্টেনিয়ারিং-ফোটোগ্রাফিতে তিনি পথিকৃৎপ্রতিম। এই মুহূর্তে এ শহরেই শিল্পীর একগুচ্ছ কাজ (ছবি) দেখার সুযোগ করে দিয়েছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি মিউজ়িয়মস (ডিএজি) ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কলকাতা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দরবার হল-এ ৯ অগস্ট থেকে চলছে প্রদর্শনী ‘ভিত্তোরিয়ো সেল্লা: ফোটোগ্রাফার ইন দ্য হিমালয়াজ়’। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সোমবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে সকাল ১০টা-সন্ধ্যা ৬টা।
পথের সাথী
তখনও গ্র্যাজুয়েশন পরীক্ষার ফলও বেরোয়নি, কিন্তু ডাক এসে গেছে। টেলিভিশন আসছে কলকাতায়, তার ডাক: কথায় গাঁথতে হবে অনুষ্ঠানের মালা। দিল্লি, মুম্বইয়ের পর ১৯৭৫-এর ৯ অগস্ট তিলোত্তমার হাতেখড়ি হল ‘কলকাতা টেলিভিশন’-এ, পরে যা ‘দূরদর্শন’। চৈতালি দাশগুপ্ত শুরু থেকেই এই পথ চলার সঙ্গী। ’৭৫ এর ১৫ অগস্ট এক লাইভ অনুষ্ঠানের সম্প্রচারে প্রথম টিভির পর্দায়, তার পর কত বছর ধরে কত ঘোষণা সংযোজনা সঞ্চালনা, কত গুণিজনের সঙ্গ ও দর্শন, কত সহকর্মী মিলে নতুন এক প্রচারমাধ্যমকে সমৃদ্ধ করে তোলা (ছবি)— দিনের পর দিন। কলকাতা দূরদর্শন পঞ্চাশ পূর্ণ করল, সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের এই আবহেই প্রকাশ পেল চৈতালি দাশগুপ্তের বই— কেয়ার অফ দূরদর্শন (প্রকা: সপ্তর্ষি)। ১৪ অগস্ট নারী সেবা সঙ্ঘের কৌশিক হল-এ হল আনুষ্ঠানিক প্রকাশ, উদ্বোধন ও কথালাপে ছিলেন জহর সরকার বিভাস চক্রবর্তী অভিজিৎ দাশগুপ্ত শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্ত শাশ্বতী গুহঠাকুরতা, লেখিকা নিজেও।
ভাদ্রোৎসব
রামমোহন রায় তাঁর একেশ্বরবাদের উপাসনা সর্বসমক্ষে ঘোষণা করেন ১৭৫০ শকের ৬ ভাদ্র, ২০ অগস্ট ১৮২৮। চিৎপুরে কমল বসুর বাড়ির দু’টি ঘর ভাড়া করে ব্রাহ্মসমাজের স্থাপনা হয়, সমাজ সংস্কার ও নবচেতনার প্রসারে যার কৃতি সুবিদিত। ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা, অনাদ্যনন্ত অগম্য অপরিবর্তনীয় পরমেশ্বরের উপাসনা পদ্ধতি সৃষ্টি করেছিলেন রামমোহন রায়, ভক্তমনে ঈশ্বরচেতনা জাগিয়ে তুলতে রচনা করেছিলেন ব্রহ্মসঙ্গীত। ৬ ভাদ্রের সেই ঐতিহাসিকতা স্মরণে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ ১৯৭তম ভাদ্রোৎসবের আয়োজন করেছে ২২-২৫ অগস্ট, ২১১ বিধান সরণির প্রার্থনাগৃহে। গতকাল হয়েছে উদ্বোধন, আজ সন্ধ্যা ৭টায় ব্রহ্মোপাসনা। রবিবার সন্ধ্যায় ‘নারীশিক্ষা প্রসারে আনন্দমোহন বসুর ভূমিকা’ নিয়ে বলবেন তপতী সেনগুপ্ত, ২৫ অগস্ট সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় অতুলপ্রসাদ সেন ও রজনীকান্ত সেনের স্মরণে ব্রহ্মসঙ্গীতানুষ্ঠান— নূপুরছন্দা ঘোষের পরিচালনায়।