নতুন উদ্বোধন তো হল, পুরনো মেট্রোর স্টেশনগুলির অবস্থা খালি দেখুন!
আজ তক | ২৩ আগস্ট ২০২৫
কলকাতায় মেট্রোর নতুন অধ্যায় শুরু করতে শুক্রবার শহরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একসঙ্গে তিনটি নতুন মেট্রো রুটের উদ্বোধন করেন তিনি। কিন্তু উদ্বোধনের চকচকে ছবির আড়ালে থেকে গেল কিছু বাস্তবতা, যা প্রধানমন্ত্রী দেখতে পেলেন না।
ক্ষুদিরাম স্টেশনের ৬ ডাস্টবিন
দক্ষিণ কলকাতার শহীদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে ৬টি ডাস্টবিন। তবে এগুলি ময়লা ফেলার জন্য নয়, বরং ছাদ ফুঁড়ে নামা বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত যাত্রী সেই ডাস্টবিনগুলির পাশ দিয়ে যাতায়াত করছেন, কিন্তু সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। ২০১০ সালে চালু হওয়া এই স্টেশনটি বর্তমানে নীল লাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনাল।
রাজনীতি ও দোষারোপের খেলা
পূর্ব–পশ্চিম মেট্রো প্রকল্প বাস্তবায়নে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেরি হয়েছে। বউবাজারে ভেঙে পড়া বাড়িঘর, উচ্ছেদ হওয়া শতাধিক পরিবার এবং দোষ চাপানোর রাজনীতি এই প্রকল্পকে বারবার আটকে দিয়েছে। সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপি, সকলেই দায়িত্ব এড়াতে একে অপরকে দোষারোপ করেছে।
বাস্তবের যানজট রয়ে গেল
শহরের অফিসযাত্রীদের সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম চিংড়িঘাটা ক্রসিং। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে পড়েন। নতুন মেট্রো চালু হলেও এই যানজট পুরোপুরি কমবে না, কারণ আইটি হাব সেক্টর ভি পর্যন্ত সহজ যোগাযোগ তৈরি হতে এখনও কয়েক বছর লাগবে।
অসমাপ্ত কাজ
প্রধানমন্ত্রী যে তিনটি রুট উদ্বোধন করেছেন তার মধ্যে কয়েকটি স্টেশনের নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। বেলেঘাটা থেকে জয় হিন্দ বিমানবন্দর পর্যন্ত কমলা লাইনের বেশ কিছু স্টেশন তৈরিই হয়নি। সবুজ লাইনেরও বেশ কয়েকটি স্টেশন অসম্পূর্ণ। কবি সুভাষ টার্মিনাস, যা নীল ও কমলা লাইনকে সংযোগ করে, স্তম্ভে ফাটল ধরায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে আছে।
যাত্রীরা বলছেন
'নতুন মেট্রো চালু হওয়ায় সুবিধা বাড়ল ঠিকই, কিন্তু স্টেশনের ভেতরের অব্যবস্থা বা প্রতিদিনের যানজট এখনো যেমন ছিল, তেমনই রয়ে গেছে,' অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। অর্থাৎ, কলকাতার মেট্রো যাত্রার পরিসর অবশ্যই বেড়েছে, কিন্তু তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যে সমস্যাগুলি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, সেগুলি আড়ালেই রয়ে গেল।