• পড়াশোনা নিয়ে বাবার বকা, মায়ের মৃত্যুর স্মৃতি ফিরিয়ে একই কায়দায় ‘আত্মঘাতী’ ছাত্র
    প্রতিদিন | ২৪ আগস্ট ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: বছর তিনেক আগে সাংসারিক অশান্তির জেরে আত্মঘাতী হয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। বিষ খেয়ে নিজেকে শেষ করে দিয়েছিলেন তিনি। আর তিন বছর পর একইভাবে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা কিশোর ছেলের! শনিবার সকালে গোবরডাঙা থানার প্রতাপনগরের গণদীপায়ন এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্রের দেহ। পরিবার সূত্রে খবর, পড়াশোনা নিয়ে শুক্রবার ছেলেকে বকাবকি করেছিলেন বাবা। সেই অভিমানেই ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান বাড়ির সদস্যদের। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি তদন্তে নেমেছে গোবরডাঙা থানার পুলিশ।

    জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম চন্দন হালদার। বছর ষোলর চন্দন হাবড়ার হাটথুবা বয়েজ হাইস্কুলের পড়ুয়া ছিলেন। তিন বছর আগে মায়ের মৃত্যুর পর থেকে বাবা শিমুল হালদারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকত সে। সংসার, কাজকর্মের পাশাপাশি একমাত্র ছেলের পড়াশোনা নিয়েও বেশ মনোযোগী ছিলেন শিমুলবাবু, খোঁজখবর রাখতেন নিয়মিত। ইদানীং পড়াশোনোয় খানিকটা অমনোযোগী হয়ে পড়েছিল চন্দন। তা নিয়ে শুক্রবার রাতে ছেলেকে বকাঝকা করেছিলেন বাবা। তখনকার মতো ভর্ৎসনা সহ্য করে নিয়েছিল চন্দন। রাতে খাওয়াদাওয়াও করেছিল। তারপরই ঘটল বিপত্তি। মাঝরাতে নিজের ঘর থেকেই চন্দনের নিথর দেহ উদ্ধার হল।

    পরিবারের সদস্যদের প্রাথমিক অনুমান, রাতে খাওয়াদাওয়ার পর নিজের ঘরে ঢুকে বাড়িতে রাখা কীটনাশক খেয়ে নিয়েছে চন্দন। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে তার। বিষয়টি জানার পরই বাবার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তড়িঘড়ি চন্দনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপতালে। তার শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকায় গভীর রাতেই চন্দনকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় চন্দনের।

    বাবার কাছে বকা খেয়ে অভিমানেই কি আত্মহত্যার পথ বেছে নিল ষোল বছরের কিশোর? এ প্রসঙ্গে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তীর্থংকর দাশগুপ্তের মত, ”তার মা যেহেতু আত্মঘাতী হয়েছেন, তাই ছেলের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা থাকতে পারে। এছাড়া বাহ্যিক পরিস্থিতি সহ্য করার ক্ষমতাও হয়ত কম ছিল। তাই বাবার বকাঝকাতেই সে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)