• ‘বাংলা ভাষায় কথা বলতেই ওরা মারল', এ বার ওডিশায় ডাক্তার দেখাতে গিয়ে নিগৃহীত বঙ্গের বাঙালি
    এই সময় | ২৪ আগস্ট ২০২৫
  • আবারও বাংলা ভাষায় কথা বলায় অত্যাচারের অভিযোগ উঠল ওডিশায়। তবে এ বার কাজের প্রয়োজনে পড়শি রাজ্যে যাওয়া কোনও পরিযায়ী শ্রমিক নন, নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ তুললেন চিকিৎসার প্রয়োজনে সে রাজ্যে যাওয়া এক পশ্চিমবঙ্গবাসী।

    জানা গিয়েছে, কটকের হাসপাতালে নিজের শাশুড়িকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের মেটার যমুনা গ্রামের বাসিন্দা ভবেশ প্রামাণিক। সেখানেই বাংলা ভাষায় কথা বলতে বাংলাদেশি ভেবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। বাংলা ভাষায় কথা বলার পরই স্থানীয়রা মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশেরও কয়েকজন তাঁকে মারধর করে বলে দাবি পেশায় দিনমজুর ভবেশের।

    শনিবার বিকেলে নিজের ভাঙাচোরা, একচিলতে মাটির বাড়িতে বসে ভবেশ বলেন, ‘আমি শাশুড়িকে নিয়ে কটকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছুজন আমাকে বাংলাদেশি ভেবে পেটায়! তার পরে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। থানারও কিছুজন আমাকে মারল। কেন মারবে ওরা? আমি ওদের শাস্তি চাই।’

    বছর ৪৫-র ভবেশ জানিয়েছেন, কোনমতে কটক থেকে পালিয়ে এসেছেন তিনি। তাঁর শাশুড়ি অবশ্য আগেই ট্রেনে করে বাড়ি ফেরেন। তিনিও বাড়ি পৌঁছে সকলকে জানান বিষয়টি। প্রতিবেশীরা ভবেশের খোঁজে ওডিশায় যাওয়ার কথা চিন্তাও করছিলেন। এর মধ্যেই শনিবার সকালে বাড়ি ফেরেন ভবেশ।

    ওডিশায় নির্যাতিত ব্যক্তি বলেন,‘১০-১২ দিন ধরেই আটকে রেখেছিল। শুধু মারধর করেছে। খাওয়া-দাওয়া নেই!’ স্থানীয় বাসিন্দা রঘুনাথ দে-এর দাবি,‘ভবেশ বাংলা ভাষায় কথা বলতেই মারধর করে। ওকে মেরে দেওয়ারই ছক করছিল! কোনমতে লুকিয়ে লুকিয়ে পালিয়ে আসে। তারপর ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরেছে।’

    এ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, ‘ঠিক এ ভাবেই ওডিশা-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের উপর তথা বাংলাভাষীদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ওড়শাতে বিজেডি ক্ষমতায় থাকাকালীন এমনটা হয়নি, কিন্তু বিজেপি-র আমলে হচ্ছে। তবে, অন্য রাজ্যে এই ভয়-ভীতি-আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে বিজেপি ছাব্বিশ সালে বাংলায় আসার যে স্বপ্ন দেখছে, মানুষই তা রুখে দেবে।’

    পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সহ রাজ্য সরকারকে বিঁধে বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন,‘এটা কোনও বাংলা ভাষার বিষয়ই নয়। ওখানকার সরকারি হাসপাতালগুলিতে বাঙালিদের এত ভিড় বেড়ে গিয়েছে, সেজন্যই ওখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই এই নোংরা রাজনীতি না করে, এখানকার সরকারি হাসপাতালগুলির দিকে নজর দিক রাজ্য সরকার। মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক নিজেও মেদিনীপুর মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে আছেন। কী অবস্থা এখানে? মানুষ পরিষেবাই পায় না।’

  • Link to this news (এই সময়)