রাজ্য ছাড়ল জয়েন্টের প্রথম ১০ মেধাবী, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মেধা পাচার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৪ আগস্ট ২০২৫
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ হতেই ফের মাথাচাড়া দিল মেধাপাচারের আশঙ্কা। রাজ্যের মেধাবীরা কি ক্রমশ বাইরে পাড়ি জমাচ্ছে? জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার এ বছরের প্রথম ১০ জনের মধ্যে কেউই রাজ্যে থেকে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেননি। ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে গবেষণা—উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের জন্য তাঁদের পছন্দ দেশের অন্যান্য প্রিমিয়ার ইনস্টিটিউট।
জানা গিয়েছে, সর্বভারতীয় মেধাতালিকার প্রথম ১০ জনের কেউ যাচ্ছেন আইআইটি খড়্গপুরে, আবার কেউ পাড়ি দিচ্ছেন দিল্লি, মুম্বই, পুণে বা বেঙ্গালুরুর নামী প্রতিষ্ঠানে। রাজ্যের সরকারি বা বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হচ্ছেন না প্রায় কেউই। শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ প্রবণতা নতুন নয়। প্রতিবছরই উচ্চতর সুযোগ, আধুনিক পরিকাঠামো এবং গবেষণার উন্নত পরিবেশের খোঁজে মেধাবীরা রাজ্যের বাইরে চলে যাচ্ছেন।
রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা, গবেষণার সুযোগ এবং প্লেসমেন্টের অভাবই ছাত্রছাত্রীদের অন্য রাজ্যে বা বিদেশে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা, এখনই পরিকাঠামোগত পরিবর্তন না হলে আগামী দিনে আরও বেশি মেধাবী ছাত্রছাত্রী রাজ্য ছেড়ে চলে যাবেন, যার প্রভাব পড়বে রাজ্যের প্রযুক্তি ও শিল্পোন্নয়নে।
উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তার কথায়, “আমরা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করার চেষ্টা করছি। নতুন কোর্স চালু, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা এবং উন্নত প্লেসমেন্টের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা চলছে।”
তবে শিক্ষামহলের একাংশের মতে, যতদিন না রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আধুনিক চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে, ততদিন মেধাপাচার রোধ করা সম্ভব নয়। শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, বাংলার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার মান ও সুযোগসুবিধার অভাবই মেধা পাচারের অন্যতম কারণ। বিশেষত পরিকাঠামোর ঘাটতি, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ল্যাবের অভাব এবং আন্তর্জাতিক মানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সংযোগ না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যের প্রযুক্তি শিক্ষা ক্ষেত্রকে উন্নত করতে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক বছরে অত্যাধুনিক গবেষণাগার, আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রম এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে পরিস্থিতি পাল্টানোর চেষ্টা করা হবে।