বড়জোর ৫ বছর টিঁকবে, ১১৩ বছরের ভিক্টোরিয়া সেতু মেরামতের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
প্রতিদিন | ২৪ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব সংবাদদাতা, দার্জিলিং: শৈল শহরের ১১৩ বছরের পুরনো ভিক্টোরিয়া সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। শনিবার দু’জন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার স্থানীয়ভাবে চিয়াং ছিয়াংগে নামে সেতুটি ঘুরে দেখেন এবং খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। তাঁরা জানান, সেতুর অবস্থা এতটাই খারাপ যে দ্রুত মেরামত না করা হলে মাত্র পাঁচ বছর টিকে থাকতে পারবে।
১৯১২ সালে দার্জিলিং পুরসভার উদ্যোগে সেতুটি নির্মিত হয়। ১১৩ বছর পর এই প্রথম সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলো। সেতুটির অবস্থা খুবই জীর্ণ। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং পুরসভার উদ্যোগে যাদবপু বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিশেষজ্ঞ এদিন সেতুটি ঘুরে দেখেন। তারা জানান, সেতুর বাহ্যিক অবস্থা দেখে প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষা করার জন্য আরও একবার জরিপ করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞ দলের এক সদস্য অধ্যাপক সম্রাট সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সাধারণভাবে বলতে গেলে দ্রুত মেরামত না করা হলে সেতুটি মাত্র পাঁচ বছর টিকতে পারে। আজকের পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে পুরসভায় পাঠানো হবে।’’ দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন ঠাকুরি বলেন, ‘‘সেতুটিকে ঐতিহ্যবাহী হিসেবে দেখছি। এই সেতুটি পুরসভার অধীন। শুনেছি ২০০৭ সালে এটি হেরিটেজ ভূক্ত হয়। কিন্তু সেই বিষয়ে কোনও নথি পাইনি। তবে আমরা এটি রক্ষার জন্য জরিপ শুরু করেছি। এটি মেরামত করা হবে।’’
ভিক্টোরিয়া সেতু মূলত সিত্রাবং চা-বাগানকে দার্জিলিং বাজারের সঙ্গে যুক্ত করেছে। যদি এই সেতুটি ভেঙে পড়ে তবে দার্জিলিং বাজারের সঙ্গে এই চা বাগানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। তাই সিত্রাবং চা-বাগান কর্তৃপক্ষ আরও একটি রাস্তা নির্মাণ করছে। ১৮৯৭ সালে দার্জিলিংয়ের ভিক্টোরিয়া সেতুর নিচে এশিয়ার প্রথম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মিত হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার পণ্য পরিবহণের জন্য এই সেতুটি তৈরি করেছিল। সেতুর দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট এবং উচ্চতা ১০০ ফুট। এর প্রধান আকর্ষণ হল সেতুর কোনও স্তম্ভ নেই। জলপ্রপাতের দুটি তীরে স্থাপন করে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে। এটি বর্তমানে রাজবাড়ি বস্তি, ভক্তে বস্তি, সিত্রাবং এবং ডালি এলাকাকে দার্জিলিং বাজারের সঙ্গে যুক্ত করেছে।